রাজধানীর ইসলামপুরে ক্লাসিক্যাল হোমটেক্সের ১৪১ কোটি টাকার বিক্রয়ের গোপন তথ্য উদঘাটন : ভ্যাট আইনে মামলা
ঢাকা ২৩ ডিসেম্বর ২০২১ :
এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা রাজধানীর ইসলামপুরে নিজস্ব ব্র্যান্ড সংবলিত একটি তৈরি পোশাক বিপণন প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে।এতে প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ১৪১ কোটি টাকার ভ্যাটযোগ্য বিক্রয় মূল্য গোপন করেছে।এই গোপনকৃত বিক্রয়মূল্যে প্রায় ৬ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি সংঘটিত হয়েছে।
ক্লাসিক্যাল হোমটেক্স ইন্ডাটিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি ১১৪-১১৬ ইসলামপুর রোড, জাহাঙ্গীর টাওয়ার, ঢাকা-১১০০ এ অবস্থিত।এর ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর- ০০১৭১২৮৫৮-০২০৫।
গোপন সংবাদ অনুযায়ী ক্লাসিক্যাল হোমটেক্স ইন্ডাটিজ লিমিটেড প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত সেবা বিক্রি গোপন করে চালান ব্যতিত সেবা সরবরাহ করে দীর্ঘ দিন যাবৎ সরকারের বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে।এই সংবাদের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থার উপ-পরিচালক জনাব তানভীর আহমেদ এর নেতৃত্বে গত ২৪/১১/২০২১ তারিখে প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে গোয়েন্দার দল দেখতে পান, প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ঢাকা দক্ষিণ কমিশনারেটের আওতাধীন কোতয়ালী বিভাগের আরমানিটোলা ভ্যাট সার্কেলে কম রাজস্ব পরিশোধ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রদত্ত মাসিক দাখিলপত্রে প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।
পরিদর্শনের শুরুতে কর্মকর্তাগণ প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত ও বাণিজ্যিক দলিলাদি প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করা হলে প্রতিষ্ঠানের এমডি মো: শামীম হোসাইন ভ্যাট কর্মকর্তাগণের চাহিদা অনুসারে ভ্যাট দলিল উপস্থাপন করতে পারেননি।এছাড়া তিনি আরো উল্লেখ করেন, সেবা প্রদানের বিপরীতে সেবার কোন মূল্য তালিকা নেই;
প্রতিষ্ঠানে কোন ভ্যাট চালান ইস্যূ করা হয় না এবং প্রদানকৃত সেবার স্বপক্ষে কোন তথ্য সংরক্ষণ করা হয় না।
এরপর প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়ে এবং প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারে ধারণকৃত তথ্যাদি যাচাই করে সেবা বিক্রি সংক্রান্ত বাণিজ্যিক দলিলাদি লুকায়িত অবস্থায় আটক করা হয়।এসব তথ্য ভ্যাট দলিলাদির সাথে ব্যাপক অসামঞ্জস্য পরিলক্ষিত হয়।
তদন্ত অনুসারে, মে ২০১৭ হতে অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ২০০,৬৭,৮২,৮২২ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে।তবে প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় ভ্যাট সার্কেলে মাসিক রিটার্নে সর্বমোট ৭৬,৮৫,৩২,৩৩১ টাকা বিক্রিয় হিসাব প্রদর্শন করেছে।রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ১৪০,৯৯,৫২,৪৮৯ টাকা।প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করায় ৪,৪৩,০৮,৮৫৭ টাকা ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে।এই ফাঁকির উপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২% হারে ১,৫৫,৭৮,৪৯৩ টাকা বিলম্বজনিত সুদ হিসেবে প্রযোজ্য হবে।
উল্লেখ্য, সারাদেশে প্রতিষ্ঠানটির ৬টি শাখা রয়েছে।প্রতিষ্ঠানটি মুলতঃ বেডশিট, কম্ফোর্টার, কম্বল ও অন্যান্য হোম টেক্সটাইল সামগ্রী তৈরি ও বিক্রয় করে।নতুন ভ্যাট আইন অনুসারে পোশাকের ওপর ৭.৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য।
তদন্তে পরিহারকৃত ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটে প্রেরণ করা হয়েছে।