জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাণী
জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাণী
ঢাকা, ২ ভাদ্র (১৭ আগস্ট) :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ১৮ আগস্ট ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন এবং সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের লক্ষ্য। তিনি আজীবন শান্তি, মানবপ্রেম ও ন্যায়ের পতাকা সমুন্নত রেখেছেন। শ্রীকৃষ্ণ তাঁর জীবনাচরণ এবং কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের আরাধনা করেছেন।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আওয়ামী লীগ সরকার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা বাঙালির হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সোহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
করোনা বাস্তবতায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। আমি আশা করি, জন্মাষ্টমীর এ উৎসব শ্রীকৃষ্ণের ভক্তগণকে তাঁর জীবনাদর্শ অনুসরণ করতে আরো অনুপ্রেরণা যোগাবে।
আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলি। প্রতিষ্ঠা করি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে আমি দেশের সকল নাগরিকের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির বাণী
ঢাকা, ২ ভাদ্র (১৭ আগস্ট) :
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ১৮ আগস্ট শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“ধর্মাবতার শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিবস ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষ্যে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
জন্মাষ্টমী হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন পরোপকারী, প্রেমিক, রাজনীতিক ও সমাজ সংস্কারক। সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন। যেখানেই অন্যায়-অবিচার এ ধরাধামকে গ্রাস করেছে সেখানেই শ্রীকৃষ্ণ আবির্ভূত হয়েছেন আপন মহিমায়। সনাতন ধর্ম মতে, অধর্ম ও দুর্জনের বিনাশ এবং ধর্ম ও সুজনের রক্ষায় তিনি যুগে যুগে পৃথিবীতে আগমন করেন। অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য শ্রীকৃষ্ণ মথুরার অত্যাচারী রাজা কংসকে হত্যা করে মথুরায় শান্তি স্থাপন করেন। কৃষ্ণের প্রেমিকরূপের পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর বৃন্দাবন লীলায়, যা বৈষ্ণব সাহিত্যের মূল প্রেরণা।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের মহান ঐতিহ্য। জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জনে সকলকে সম্মিলিতভাবে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সোহার্দ্য অটুট রাখতে হবে। করোনা মহামারি ও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ-সংঘাতের কারণে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি এখন ঊর্ধ্বগতি। বাংলাদেশও এর ব্যাতিক্রম নয়। এর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ নানা সীমাবদ্ধতার মাঝে দিনাতিপাত করছে। আমি শ্রীকৃষ্ণের দর্শনকে ধারণ করে পরোপকারের মহান ব্রত নিয়ে সমাজের অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে জন্মাষ্টমীর আয়োজন আরো উৎসবমুখর হয়ে উঠুক-এ প্রত্যাশা করি।
আমি শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উৎসবের সাফল্য কামনা করি।
জয় বাংলা। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”