পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার বৈধতা দেয়া হলেও নৈতিকভাবে গ্রহনযোগ্য নয় : পরিকল্পনা মন্ত্রী
ঢাকা ০১ জুলাই ২০২২ :
এবারের বাজেটে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার সুযোগ আইনগতভাবে বৈধ করা হলেও নৈতিকভাবে তা গ্রহনযোগ্য নয়। বাংলাদেশ থেকে যে পরিমান টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে আইনের বৈধতা দিয়েও তা পুরোপুরি ফেরত আনা সম্ভব নয়।
চুরি করা টাকা ফেরানোর জন্য পাচার করেনি পাচারকারীরা। তাই পাচারকৃত অর্থের খুব সামান্যই দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে। বাংলাদেশে এক শ্রেনীর মানুষের নিকট প্রচুর টাকা রয়েছে, যে টাকা নানাভাবে পাচার হচ্ছে। যেসব দেশে টাকা পাচার করা হয় সে সব দেশের সরকার অর্থের বৈধতা যাচাই না করেই তা বিনিয়োগের সুযোগ করে দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে দেশে কিছু টাকা ফেরত আসলে অসুবিধা কোথায়?
তাই পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত মন্দের ভালো। সরকার বিশেষ কোন গোষ্ঠীর স্বার্থ সিদ্ধির জন্য কাজ করছে না।
আজ এফডিসিতে এবারের বাজেট নিয়ে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান, এমপি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, এবারের বাজেটে দেখা যাচ্ছে দেশের বিদ্যমান মানিলন্ডারিং আইনের যথাযথ প্রয়োগ না করে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যা অর্থপাচারকারী দুষ্কৃতিকারীদের প্রশয় দেয়ার সামিল। এতে মনে হতে পারে মাত্র ৭ শতাংশ কর পরিশোধের মাধ্যমে অর্থপাচারকারীদের দায়মুক্তি সনদ দেওয়া হচ্ছে। নতুন এই বাজেটে ব্যবসায়ী, বিত্তবান, মুনাফাভোগী ও অর্থপাচারকারীদের স্বার্থ বেশি দেখা হয়েছে। জনমনে ধারণা হতে পারে যারা সরকার বানায় আর সরকার ফেলায় তাদেরকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এবারের বাজেটে।
গত ২ বছর ধরে বাংলাদেশসহ সারা বিশ^ করোনায় আক্রান্ত। ব্যবসা বাণিজ্য জীবন জীবিকা ছিলো প্রায় অচল। তারপরেও কিভাবে, কাদের সহযোগিতায় অর্থপাচারকারীরা বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমান টাকা সুইস ব্যাংক, দুবাই, সিঙ্গাপুর, কানাডায় পাচার করলো তা খতিয়ে দেখা জরুরী। জনাব কিরণ আরো বলেন, জাতীয় সংসদে যখন এই বাজেট পাশ হচ্ছে তখন সিলেট, সুনামগঞ্জ সহ দেশের কয়েকটি জেলা বন্যার পানিতে ভাসছে।
চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে কয়েক লাখ মানুষ। বানভাসি এসব প্রান্তিক মানুষের পুর্নবাসনের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেখা যায়নি এই বাজেটে। দুর্যোগ মোকাবিলায় এবারের বাজেটে মোট বরাদ্দের মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ রাখা হয়েছে। অথচ দেশের সার্বিক দুর্যোগের ঝুঁকি বিবেচনায় মোট বাজেটের ৩ থেকে ৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন ছিলো।
প্রতিযোগিতায় সরকারি তিতুমীর কলেজকে পরাজিত করে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় এর বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ছায়া সংসদে বিচারক ছিলেন উন্নয়ন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক রিজভী নেওয়াজ, সাংবাদিক কাবেরী মৈত্রেয় ও সাংবাদিক আরিফুর রহমান। ছায়া সংসদে মক স্পিকার হিসেবে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়। প্রতিযোগিতাটি আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক।