বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাণী
বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাণী
ঢাকা ১৪ জুলাই ২০২২ :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ১৫ জুলাই ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বাংলাদেশ জাতিসংঘের আহ্বানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় প্রতিবছর ১৫ জুলাই ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ উদযাপন করতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন যুবসমাজের আইকন। তিনি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন যুবরাই জাতির প্রাণশক্তি, উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রধান নিয়ামক। শুধু তাই নয় তারা সাহসী, বেগবান, প্রতিশ্রুতিশীল, সম্ভাবনাময় এবং সৃজনশীল। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে যুবসমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছি। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করার লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন কারিগরি, বৃত্তিমূলক এবং কৃষিভিত্তিক বহুমুখী প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আর এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজন বিদ্যমান জনশক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা; ক্রমবর্ধমান শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বহুমুখী শ্রমের চাহিদাপূরণ করা; প্রযুক্তির পরিবর্তনে কর্ম-সংকোচনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের পুনঃপ্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মপোযোগী করা এবং পরিবর্তিত আন্তর্জাতিক বাজারে অধিক সংখ্যক দক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।
বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছে। দক্ষতার মান উন্নয়ন, দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচিসমূহের আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগীকরণ, অভিন্ন সনদায়ন ব্যবস্থা প্রবর্তন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন এবং সামাজিক মর্যাদা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিকট ন্যস্ত করা হয়েছে। দক্ষতা উন্নয়নের চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি-বেসরকারি সকল অংশীজনের সহযোগিতা নিয়ে সময়োপযোগী একটি দক্ষতা উন্নয়ন ইকো-সিস্টেম তৈরি ও বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নকল্পে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ সম্পর্কীয় সকল কার্যক্রমের সমন্বয়সাধন, দক্ষতার পারস্পরিক স্বীকৃতি, অভিন্ন প্রশিক্ষণ কারিকুলাম প্রণয়ন ও সনদায়ন এবং পূর্ব অভিজ্ঞতার স্বীকৃতি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সাথে কাজ করছে।
আজকের যুব সমাজই জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ ও আত্মমর্যাদাশীল ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের প্রধান কারিগর। দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমেই আমাদের যুব সমাজের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে তাদের সচেতন করা, আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত করা ও কর্মসংস্থানের পথ নির্দেশনা প্রদান করার ক্ষেত্রে বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস পালন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে-এই আমার প্রত্যাশা।
আমি ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”
বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবসে রাষ্ট্রপতির বাণী
ঢাকা ১৪ জুলাই ২০২২ :
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ আগামীকাল ১৫ জুলাই ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস ২০২২’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) কর্তৃক বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস ২০২২’ উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। প্রতিযোগিতামূলক ও চ্যালেঞ্জিং শ্রমবাজারে টিকে থাকার জন্য কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করতে এ দিবস উদযাপন সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। উন্নয়নকে গতিশীল করার পূর্বশর্ত দক্ষ জনশক্তি। বর্তমান বিশ্বে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাবে শিল্প কলকারখানাসমূহ উচ্চমাত্রার কার্যক্ষমতা বজায় রাখার স্বার্থে ডিজিটাইজেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ই-কমার্স, আইটি, ক্লাউড কম্পিউটিং, রোবোটিক্স, ব্লক চেইন, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ন্যানো প্রযুক্তি ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলো ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে অনেক পেশার অবলোপন যেমন হয়েছে তেমনি নতুন নতুন পেশার দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আমাদের যুবসমাজকে বর্তমান ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় পেশায় প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদের দেশ ও বিদেশের শ্রমবাজারের উপযোগী করে তোলার কোনো বিকল্প নেই।
দক্ষতা অর্জনকে সরকার একটি অগ্রাধিকার কার্যক্রম হিসেবে গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছে এনএসডিএ। দক্ষতা ও প্রশিক্ষণকে সুনির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার জন্য এ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রমকে সমন্বিতভাবে পরিচালিত করা, মান উন্নয়ন ও মান তদারকি করার জন্য রেগুলেটরি অথরিটি হিসেবে এনএসডিএ’র ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করি, শ্রমবাজারের চাহিদা ও পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে দক্ষতা উন্নয়নে কার্যক্রম গ্রহণ ও এ সকল কার্যক্রমে অংশীজনদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিতকরণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ সম্পর্কে বিদ্যমান সামাজিক নেতিবাচক ধারণা দূরীকরণে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
আমি ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস ২০২২’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কার্যক্রমের সফলতা কামনা করছি।
জয় বাংলা। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”