কর্মক্ষম যুবশক্তির কর্মসংস্থান না করা গেলে জনমিতিক লভ্যাংশের সুফল ভোগ করা যাবে না
ঢাকা ২৮ জুন ২০২২ :
জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট উত্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, যা দেশের এ যাবৎকালের সর্ববৃহৎ বাজেট। করোনা মহামারি কাটিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন- গ্রগতিতে এ বাজেটের গুরুত্ব অপরিসীম।
মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ কর্মক্ষম মানুষ নিয়ে জনমিতিক লভ্যাংশের এক সোনালী সময় অতিক্রম করছে বাংলাদেশ। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই কর্মক্ষম যুবশক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ না করা গেলে জনমিতিক লভ্যাংশের সুফল ভোগ করা যাবেনা।
আজ গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন, দি আর্থ সোসাইটি, ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ, তারুণ্যের বাজেট আন্দোলন, সেইফটি এন্ড রাইটস সোসাইটি, দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে জাতীয় সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাব এর এলডি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যগণের সামনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তরুণরা বাজেট নিয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দি আর্থ সোসাইটির মোসলেহ উদ্দিন । গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার মোস্তফা বলেন ডিবিএম প্রায় বারো বছর ধরে জাতীয় বাজেটে সাধারণের তথা করদাতাদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ও বাজেট বিকেন্দ্রীকরণের কথা বলে আসছেন; গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী করতে হলে শুধু নির্বাচনই যথেষ্ট নয়, রাস্ট্র প্রক্রিয়ার নানান দিক পদ্ধতি প্রক্রিয়া এগুলোরও গনতন্ত্রায়ন দরকার।
দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো: জাকারিয়া বলেন তরুনদের সাথে জনপ্রতিনিধিদের এই মতবিনিময়ের আয়োজনটি জুন মাস নয় আরো আগে করতে পারলে এর ফলটি আরো ভাল পাওয়া যেত। তরুনদের তিনি মাদক থেকে দুরে এবং তথ্য প্রযুক্তির কুফল নয় সুফলটাকে বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ব্যবহার করার আহ্বান জানান।
আশেক উল্ল্যাহ রফিক,এমপি, তিনি বলেন, গবেষনা এবং দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কাজ চলছে।স্থানীয় পর্যায়ে বাজেট এবং জনপ্রতিনিধিক্বমূলক বাজেট তৈরিতে তরুণরা যখন জাগ্রত হবে তখন আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ধারাবাহিক ভাবে এই বিষয়গুলোতে সচেতন হবে।
আহসান আদেলুর রহমান, এমপি বলেন নতুন করে যাতে ধূমপায়ী তৈরী না হয় সেজন্য তিনি বাজেটে তামাকের উপর ১০০% প্রত্যক্ষ কর আরোপ করা এবং পরিবেশ রক্ষায় সিঙ্গেল ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, কূষি খাতের উপর গুরুত্ব দিয়ে আমাদের দেশে যে ১০ লাখ এসএসসি পাস তরুণ রয়েছে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। তিনি কারিগরি ক্ষেত্রে সক্ষমতা এবং মানউন্নয়নের কথা বলেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী, এমপি, বলেন এখন পর্যন্ত তরুণদের স্কীল ডেভেলপ্মেন্ট নিয়ে কোন মেগা প্রজেক্ট হয়নি। যেহেতু তরুণ, মন্ত্রী নাই, সচিব নাই তাই তরুণ দের স্বার্থ বাজেট সংসদে কখনই পাশ হবে না। সুতরাং ইয়ুথ ডেভলপমেন্ট,ইয়ুথ এম্পাওয়ারমেন্ট এবং তাদের জব মার্কেটে জন্য তাদের তৈরি করা, উদ্দ্যোক্তা তৈার করা।
সেলিম আলতাফ জর্জ, এমপি বলেন তরুণরা ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রতিনিধি, তারা বাজেটের মত বিষয় নিয়ে চ্যালেন্জ গ্রহণ করছেন এতে তাদেরকে সাধুবাদ জানাই, ফোরাম থেকে অনেকেই বলেছেন বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনিয়মের কথা, এ কথা আমরা স্বীকার করছি তবে এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি, তবে এ ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
মীর মুস্তাক আহমেদ রবি, এমপি বলেন- তরুনরাই পাড়ে যে সকল যায়গায় ঘাটতি আছে তা পুরন করে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে। তরুনরা কোন চেতনা নিয়ে বড় হচ্ছে এটা খুব বড় ব্যাপার। প্রবাসীদের বিষয়ে ফোরাম থেকে তোলা প্রশ্নের উত্তরে বলেন প্রবাসীরা দেশের জন্য রেমিটেন্স নিয়ে আসেন কিন্তু তারা কোনো সহযোগিতা পায়না কোনো অ্যাম্বাসির কাছে এটা দু:খজনক। তামাকের বিষয়ে তিনি বলেন আমি মনে করি এ ক্ষেত্রে কর আরো বাড়িয়ে দেওয়া উচিত, কারন এটাকে আমরা নিরুৎসাহিত করছি।
চেয়ার পার্সন, ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ তানভির শাকিল জয়, এমপি, বলেন কোভিড কালীন সময়েও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নেগেটিভ সাইডে যায়নি এই প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্যে এইবার বাজেট তৈরি হয়েছে যা কিনা আমাদেরও প্রত্যাশা পূরন করতে পারেনি, প্রতিকুল এই পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্যই অপ্রদর্শিত আয়কেও বৈধতা দেওয়া হয়েছে সাধারনের মধ্যে অসন্তোষ থাকা সত্বেও।
গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক এবং সেইফটি এন্ড রাইটস সোসাইটির নির্বাহী পরিচলিক সেকেন্দর আলী মিনা বলেন, আজকের আলোচনায় যে বিষয়টি আসা জররিী ছিল তা হচ্ছে সংস্কৃতি।
তরণদের সংস্কৃতির বিকাশ না হলে তারা অনেক কিছুতে আসক্ত হতে পারে। খেলাধুলা, সাংস্কুতিক কর্মকান্ডে তরূণদের অংশগ্রহণ না থাকলে তারা ভিন্ন পথে যাবে ।
তরুণদের কর্মসংস্থানকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির কথা বলেন। তিনি বলেন,গ্লোবালি তরুণরা মিনিংফুল এডুকেশন চাই। সেই মিনিংফূল এডুকেশন কি হবে তা তরুণদের বের করতে হবে এবং এই দাবীগুলো তরুণদের তুলে ধরতে হবে।