বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বিচারকার্যের গতি বাড়াতে হবে : আইনমন্ত্রী
ঢাকা, ২৯ আষাঢ় (১৩ জুলাই) :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ডিজিটাল যুগে বিশ্বব্যাপী কাজ করার গতি বহুগুণ বেড়ে গেছে। বাংলাদেশের বিচারকদেরকেও এটা বিবেচনায় নিয়ে বিচারকাজের গতি বাড়াতে হবে। বিচারকরা দ্রুত বিচারকার্য কীভাবে সম্পন্ন করবেন, সেটা নিয়ে তাদের ভাবতে হবে।
আজ ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ ও সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ৪৬ ও ৪৭তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিচারকদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী বলেন, যুগ কিন্তু পাল্টে গেছে। আপনারা এখন ডিজিটাল যুগের বিচারক। আগে বিচারকার্যে দেরি হলে, বিভিন্ন কারণ উপলব্ধি করে জনগণ নিজেকে বুঝ দিতো। কিন্তু এই ডিজিটাল যুগে তারা দ্রুত ন্যায়বিচার চায়। তিনি বলেন, একটি কথা চালু আছে, জাস্টিস ডিলেইড ইজ জাস্টিস ডিনাইড এবং জাস্টিস হারিড ইজ জাস্টিস বারিড। আপনাদেরকে এই দুটোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে।
মন্ত্রী যোগ করেন, সবসময় একটি অভিযোগ আসে বিচারকার্য করতে গেলে মেডিকেল অফিসার ও তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষী দিতে দেরি হয়। কারণ তাদেরকে খুঁজে বের করতে, চিহ্নিত করতে এবং কর্মস্থল থেকে বিচারিক আদালতে আনতে অনেকদিন সময় লেগে যায়। এ সমস্যা দূর করার অংশ হিসেবে মামলার চার্জশিটে মেডিকেল অফিসার ও তদন্ত কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর যুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে তাদের সাথে সহজে যোগাযোগ করে আদালতে আনা যাবে। এখন আমরা আরও একধাপ এগিয়ে যাচ্ছি। সেটা হচ্ছে এসএমএস- এর মাধ্যমে মেডিকেল অফিসার ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ প্রত্যেক সাক্ষীকে মামলার তারিখ জানানো। এর ফলে তারা আর বলতে পারবে না যে, আমরা সংবাদ পাই নাই বা আমি এই জন্য আদালতে আসতে পারিনি। এখন বিচারকদের যেটা নিশ্চয়তা দিতে হবে, সেটা হলো যেদিন মেডিকেল অফিসার বা তদন্ত কর্মকর্তা বা অন্য কোনো সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসবেন সেদিন যেন তার সাক্ষীটা হয়।
আনিসুল হক বলেন, নিজেদের অর্থায়নে আমরা পদ্মা সেতু করেছি। এটা হচ্ছে আমাদের মর্যাদার ব্যাপার। এই সেতুর কল্যাণে এখন ঢাকা থেকে চার ঘণ্টায় বরগুনায় যাওয়া যাচ্ছে। যেটা আগে লাগতো কমপক্ষে ১০-১২ ঘণ্টা। আমাদেরও কিন্তু বিচার করতে গেলে এই গতিটা মেইনটেইন করতে হবে। তা না হলে ৩৯ লাখ মামলাজট কমিয়ে আনতে পারবো না।
মন্ত্রী আরো জানান, জুডিসিয়াল অফিসার আরো বাড়ানো হবে। বিচারকের সংখ্যা গিয়ে তিন হাজারে পৌঁছাতে হবে। জুডিসিয়াল অফিসাররা যাতে গাড়ি কেনার জন্য স্বল্পসুদে সরকারি ঋণ পান সে ব্যবস্থা তিনি করবেন বলেও বিচারকদের আশ্বস্ত করেন।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মোঃ গোলাম সারওয়ার বক্তৃতা করেন।
বিদেশিদের কাছে দৌড়-ঝাঁপ না করে জনগণের কাছে যান : বিএনপিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী
ঢাকা, ২৯ আষাঢ় (১৩ জুলাই) :
বিএনপিকে বিদেশিদের কাছে দৌড়-ঝাঁপ না করে জনগণের কাছে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ।
আজ সচিবালয়ে সাংবাদিকরা সম্প্রতি জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সাথে বিএনপির বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখি, বিএনপি সবসময় বিদেশিদের কাছে ছুটে যায়। বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে, বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার কাছে তাদের দৌড়-ঝাঁপ। কিন্তু এদেশের মালিক হচ্ছে দেশের জনগণ, তারাই ক্ষমতার মালিক, তারাই প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। এদেশে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রদূত কিংবা আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি কাউকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসানোর অধিকার রাখে না।’
ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের নাক গলানোও সমীচীন নয়। কিন্তু তারা নাক গলাতে না চাইলেও আমরা দেখি বিএনপি তাদের নাকটা নিয়ে ওদের কাছে যায়। এটি দেশকে ছোট করার সামিল। আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো যে বিদেশিদের কাছে দৌড়-ঝাঁপ না করে জনগণের কাছে যাওয়ার জন্য। সেটি বরং বিএনপির জন্য মঙ্গলকর হবে।’
তথ্যমন্ত্রী এসময় সবাইকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানান এবং বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর আট লাখের বেশি গবাদি পশু কোরবানি হয়েছে। বেশি কোরবানির পশু জবাই হওয়া প্রমাণ করে যে মানুষের সামর্থ্য বেড়েছে। একইসাথে এ বছর বাংলাদেশের গবাদি পশু দিয়ে কোরবানি হয়েছে এবং অনেক গবাদি পশু ফেরত গেছে। অর্থাৎ আমাদের প্রয়োজন নিজেরাই মেটাতে পারছি। সরকারের নানামুখি নীতির কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে।
এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ পুস্তিকার মোড়ক উন্মোচন করেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মুহা. সাইফুল্লাহ, ডিএফপি’র পরিচালক মোহাম্মদ আলী প্রমুখ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
পুস্তিকাটি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, সরকার শুধু স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে তা নয়, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে দেশকে গড়ে তুলতে চান। সেজন্য সরকার ২০৩০ সাল নাগাদ, ২০৪১ সাল নাগাদ পরিকল্পনা, ২১০০ সাল নাগাদ বদ্বীপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আমাদের দেশে লোকসংখ্যা ২০৫০ সাল নাগাদ দাঁড়াবে ১৯ কোটির মতো। তবে ২১০০ সাল নাগাদ দেশে লোকসংখ্যা কমে ১৫ কোটির কাছাকাছিতে দাঁড়াবে -এমনটিই বলছে পরিসংখ্যান। ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসসহ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত আমাদের নিত্যসঙ্গী। সেই বাস্তবতার নিরিখে যদি এখন থেকে পরিকল্পনা না থাকে তাহলে দেশকে সমৃদ্ধিশালী করলেও সেটি টেকসই করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। সেই কারণেই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। এসময় পুস্তিকাটিকে ইংরেজিতে প্রকাশের জন্য ডিএফপিকে অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মোঃ মকবুল হোসেন পুস্তিকাটি প্রকাশের জন্য চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে টেকসইভাবে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিতে প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য দূরদর্শিতার পরিচায়ক। পুস্তিকাটি এই বৃহৎ পরিকল্পনাকে মানুষের সামনে সহজভাবে উপস্থাপন করতে অত্যন্ত সহায়ক হবে।
সেতু বিভাগের চলমান প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ সেতুমন্ত্রীর
ঢাকা, ২৯ আষাঢ় (১৩ জুলাই) :
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলসহ সেতু বিভাগের অধীন চলমান অন্যান্য প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী আজ বনানীতে সেতু ভবনের সম্মেলন কক্ষে সেতু বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৮৭ ভাগ।
সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় সেতুবিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কূটনীতিকদের সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়
ঢাকা, ২৯ আষাঢ় (১৩ জুলাই) :
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গতকাল কূটনীতিকদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ঈদ পুনর্মিলনীতে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধানগণ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বর্তমান ও সাবেক কূটনীতিক, সিনিয়র সাংবাদিক এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঈদ পুনর্মিলনীতে যোগ দেয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের গভীরতা আগামী দিনগুলোতে আরো বৃদ্ধি পাবে। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দের সাথে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ঈদের কুশলাদি বিনিময় করেন।
ঈদ পুনর্মিলনীর মাধ্যমে কূটনীতিকবৃন্দের সাথে কুশলাদি বিনিময়ের উদ্যোগের জন্য অতিথিবৃন্দ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।