সংশোধিত কপিরাইট আইন পাস হলে সংগীত সংশ্লিষ্টদের দাবি-দাওয়া অনেকটাই পূরণ হবে : সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ১ শ্রাবণ (১৬ জুলাই) :
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, সংগীতের সার্বিক মান উন্নয়ন, সংগীতবান্ধব সামাজিক পরিবেশ তৈরি ও সংগীত সংশ্লিষ্টদের যথাযথ সম্মান ও সম্মানি নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে সংগীতের ৩টি সংগঠন গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ, কম্পোজার এসোসিয়েশন অভ্ বাংলাদেশ ও সিঙ্গারস এসোসিয়েশন অভ্ বাংলাদেশ নিয়ে গত বছরের ১০ জুলাই ‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’ গঠিত হয়। ‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’ সংগীত সংশ্লিষ্টদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতকল্পে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিকট ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করে। সংশোধিত কপিরাইট আইন পাস হলে সংগীত সংশ্লিষ্টদের প্রস্তাবনা বা দাবি-দাওয়া অনেকটাই পূরণ হবে। জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে আইনটি পাস হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রতিমন্ত্রী আজ রাতে রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’ আয়োজিত সংগীতের মাসব্যাপী প্রথম জাতীয় উৎসব ও সম্মেলন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মানব জীবনের প্রতিটি পর্বের সঙ্গে সংগীত ওতপ্রোতভাবে জড়িত। জাতীয় জীবনেও এর গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়। তিনি বলেন, সংগীতের সুপ্ত প্রতিভা প্রতিটি বাঙালির মাঝেই বিদ্যমান। কৃষকের ধান কাটা, মায়ের বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানো, বন্ধুদের আড্ডাসহ প্রাত্যহিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা গুনগুন করে গান গাই।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংগীতসহ শিল্পের সকল শাখার শিল্পীদের সার্বিক কল্যাণ ও সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। সেজন্য অতি শীঘ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট’ নামে একটি সংস্থা যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। এটি নিয়ে এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার সংখ্যা দাঁড়াবে ১৮টিতে। এ ট্রাস্টের মাধ্যমে শিল্পীদের সার্বিক কল্যাণে বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বিশেষ অতিথি বলেন, সংগীতের কোনো ধর্ম নেই, কোনো জাত নেই, কোনো রং নেই, সংগীতের নেই কোনো দেশ। সংগীত মানুষের মনকে পরিশীলিত করে, উজ্জীবিত করে। সেজন্য সহজেই সংগীতের হাত ধরে মেলবন্ধন ঘটে মানুষের মনের। মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগীত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করেছে ও সাহস জুগিয়েছে উল্লেখ করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সে সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান শুনে অনুপ্রাণিত হতাম। সাংস্কৃতিক মুক্তি না আসলে স্বাধীনতা পরিপূর্ণ হবে না বলে তিনি এ সময় উল্লেখ করেন।
‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’ এর মহাসচিব শহীদ মাহমুদ জঙ্গী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন সিঙ্গারস অ্যাসোসিয়েশন অভ্ বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক ও সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ এর মহাসচিব কুমার বিশ্বজিৎ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী এবং মিউজিক কম্পোজার্স সোসাইটি বাংলাদেশ এর সভাপতি ও সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ এর মহাসচিব নকীব খান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিশুদের পরিবেশনা, উচ্চাঙ্গ কণ্ঠ/যন্ত্রসংগীত, পঞ্চকবির গান: মেডলি, লোকগান: লালন সাঁইজির গান, চলচ্চিত্রের গান: মেডলি, অডিও অ্যালবামের গান: মেডলি ও ব্যান্ড সংগীত পরিবেশিত হয়।
বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না : আইনমন্ত্রী
ঢাকা, ১ শ্রাবণ (১৬ জুলাই) :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, যেহেতু দেশের সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন, সেহেতু দেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার যেহেতু আইনের শাসনে বিশ্বাস করে, তাই সর্বোচ্চ আদালতের এই রায় মান্য করে। এ সময় তিনি আশ্বস্ত করেন, দেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিশ্চয়ই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।
আজ রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ন্যাশনাল স্টেকহোল্ডার কানসালটেশন অন ইনস্টিটিউশনাল অভ্ প্যারালিগ্যাল অ্যাপ্রোচ’শীর্ষক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ, যেখানে আইনের মাধ্যমে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই নির্বাচন কমিশন জনগণকে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে। এটার জন্য কারো দরজায় গিয়ে তদবিরের দরকার হবে না।
বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়। এভাবেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশেও দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। ভোট হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচনের সময় যে সরকার থাকবে তারা শুধু দৈনন্দিন কাজ করবার জন্যই থাকবে। সেটা আইনের মধ্যেই আছে। আমরা আশা করবো সবাই নির্বাচনে আসবে।
বিএনপির নেতাকর্মীদের মুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ যদি বিনা অপরাধে কারাগারে থাকে, রাজনৈতিক কারণে থাকে অবশ্যই মুক্তি পাবে। কিন্তু কেউ যদি মামলার আসামি হিসেবে থেকে থাকে, তাহলে আদালত ছাড়া তার মুক্তি সম্ভব না। মামলাজট কমাতে সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালে মামলা বেশি হচ্ছে। মামলাজটের সঠিক পরিসংখ্যান জানতে একটা কমিটি করা হয়েছে। তারা প্রকৃত মামলার পরিমাণ আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে জানাতে পারবে।
অনুষ্ঠানে আইনি সহায়তাকারী বা প্যারালিগ্যাল কর্মীদের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। ২০০৮ সাল থেকে বিভিন্ন এনজিও’র সহায়তায় ৪০টি জেলায় প্যারালিগ্যাল কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে ১০টি জেলায় এ কার্যক্রম রয়েছে। জার্মান দাতা সংস্থা জিআইজেড’র আর্থিক সহায়তা এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, জার্মান রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রস্টার, জি আই জেড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আন্দ্রেয়াস কুক ও রুল অভ্ ল প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম হেড প্রমিতাসেন গুপ্তা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মসংস্থান ও আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে : সমাজকল্যাণমন্ত্রী
লালমনিরহাট, ১ শ্রাবণ (১৬ জুলাই) :
সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেছেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যাতে কারো ওপর নির্ভরশীল না থাকে সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মসংস্থান ও আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
মন্ত্রী আজ লালমনিরহাটে সরকারি শিশু পরিবারে ২৫ শয্যাবিশিষ্ট শান্তি নিবাস স্থাপন প্রকল্পের লালমনিরহাট কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ প্রতিবন্ধীদের জন্য যে কাজ করেছেন তা বিশ্বের নিকট প্রশংসিত হয়েছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য পর্যায়ক্রমে ভাতা বাড়ানো হচ্ছে। প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও আবাসস্থল তৈরি করা হবে যাতে তারা কারো ওপর নির্ভরশীল না থাকে।
এ সময় শান্তি নিবাস স্থাপন প্রকল্প প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, শান্তি নিবাসে ষাটোর্ধ্ব বয়সের মানুষেরা থাকতে পারবে আর শিশু পরিবারের শিশুরা তাদের দাদা-দাদি বা নানা-নানি হিসেবে যত্ন নিবেন।
লালমনিরহাট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠানে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাড. মতিয়ার রহমান, বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয় রংপুরের পরিচালক সাদেকুল ইসলাম, জেলা সমাজসেবা অফিসার আব্দুল মতিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুকন্যাকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রকেই বন্দি করা হয়েছিল : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী
চট্টগ্রাম, ১ শ্রাবণ (১৬ জুলাই) :
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ বলেছেন, ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করার মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রকেই বন্দি করা হয়েছিল এবং ২০০৮ সালের ১১ জুন তাঁর মুক্তির মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রও মুক্তিলাভ করেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ক্ষমতার দরকার নেই, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য তাঁকে দরকার। এই দেশকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছানোর জন্য শেখ হাসিনাকে দরকার। আমরা সেই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব যদি মানুষকে জিম্মি করা, বিভ্রান্তি ছড়ানো, জ্বালাও-পোড়াও করা এবং নেতিবাচক রাজনীতি বন্ধ হয়। তাই যারা এ কাজগুলো করছে তাদের শুধু প্রতিবাদ নয়, প্রতিহত করতে হবে, বলেন ড. হাছান।
আজ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবরণ দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউটে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল প্রমুখ।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তৎকালীন সেনাসমর্থিত এক-এগারোর সরকারের সকল অন্যায়, অবিচার এবং দুর্নীতির একমাত্র আপোষহীন প্রতিবন্ধক ছিলেন বলেই তাকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেদিন প্রকৃতপক্ষে জননেত্রীকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে শুধু একজন ব্যক্তি শেখ হাসিনাকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি, দেশের গণতন্ত্রকে বন্দি করা হয়েছিল, গণতন্ত্রের পায়ে শেকল পরানো হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি, অনাচার-অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল। স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা হয়েছিল, যারা দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার দেশকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল, হাওয়া ভবন প্রতিষ্ঠা করে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করেছে, দেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য বানিয়েছিল, সেই বিএনপি জামাতের বিরুদ্ধে তারা অবস্থান গ্রহণ করবে। কিন্তু আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, যে স্লোগান ও বক্তব্য দিয়ে তারা সরকার গঠন করেছিল, তারাই আবার সেই অন্যায়-অবিচারের মধ্যে যুক্ত হয়ে গেল।’
এক-এগারোর সময়ের কথা উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যাকে গ্রেপ্তারের ক’দিন পর বেগম খালেদা জিয়ার পার্সোনাল উইংয়ের একজন কর্মকর্তা আমাকে ফোন করে বললো, আমাদের ম্যাডামও তো গ্রেপ্তার হতে পারে, একসাথে কিছু করতে পারলে ভালো। আমি জবাব দিয়েছিলাম, এই সিদ্ধান্ত তো দলীয়ভাবে হতে হবে এবং আমার মনে হয়েছিল সেটা সমীচীন হবে না, কারণ আমরা বিএনপির অনাচার-অবিচার, অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আন্দোলন করছিলাম। বাস্তবতা হচ্ছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা শেষ পর্যন্ত আন্দোলনে নামেনি।’
তখন আমাদের দলের অনেক বড় নেতা বেসুরে কথা বলেছেন, কিন্তু তৃণমূলে দলীয় নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সে সময় আমাদের শ্রদ্ধাভাজন নেতা জিল্লুর রহমান অত্যন্ত দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সাথে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। নেত্রী যখন কারাগারে তখন জিল্লুর রহমান ছিলেন আমাদের অফুরন্ত প্রেরণার উৎস। তাঁর সাথে ছিলেন শেখ রেহানা ও সজীব ওয়াজেদ জয়। দল ঐক্যবদ্ধ ছিল বিধায় কর্মীদের মনে আশা ছিল। কর্মীরাও ঐক্যবদ্ধ ছিল। সারাদেশ এবং বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ হয়েছে।’
দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার মানসিকতা লালন করার আহ্বান জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০০৮ সালে দল ঐক্যবদ্ধ ছিল বিধায় নেত্রীকে মুক্ত করতে পেরেছিলাম। আগামী নির্বাচনেও যদি দল ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করে, ইনশাল্লাহ ২০০৮ সালের মতো ধস নামানো বিজয় আসবে, কেউ ঠেকাতে পারবে না।’
ছাত্রলীগ নেতা আরিফের পিতার ইন্তেকালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর শোক
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ও তেজগাঁও কলেজ শাখার সহ-সভাপতি মোঃ আরিফুল ইসলামের পিতা মোঃ আবদুল কাদেরের (৬৫) ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ।
শনিবার ভোরে পাবনার চাটমোহর থানার ভেংড়ী গ্রামে নিজ বাসভবনে আবদুল কাদেরের মৃত্যুসংবাদে মন্ত্রী প্রয়াতের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন ও তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
মাদকসেবী ও মাদক কারবারিকে সামাজিকভাবে বয়কটের আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
নওগাঁ (পোরশা), ১ শ্রাবণ (১৬ জুলাই) :
মাদকসেবী ও মাদক কারবারিদের সামাজিকভাবে বয়কটের আহবান জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, ভোট ধরে রাখতে অনেকেই মাদক কারবারিদের সাথে আপস করেন কিংবা না দেখার ভান করেন। ভোট কমে যাবে এই চিন্তা বাদ দিয়ে প্রতিটি গ্রামে মাদকের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চালাতে জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
মন্ত্রী আজ পোরশা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহাররোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু অভিযান চালিয়ে, গ্রেপ্তার করে বা সাজা দিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। যার যার অবস্থান থেকে মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এখন মাদক কারবারিরা নতুন ধরনের মাদক সমাজে ছড়িয়ে দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব ভয়াল মাদক যুব সমাজকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করছে।
মন্ত্রী মাদকের অপব্যবহাররোধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জেলা বা উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী কোনো মাদক ব্যবসায়ীর পক্ষে সুপারিশ করতে পারবে না। যদি কোনো নেতাকর্মী কোনো মাদক ব্যবসায়ীর পক্ষে সুপারিশ করতে যায় সে মামলার চার্জশিটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আগামী প্রজন্মকে মাদকের প্রভাব থেকে মুক্ত রেখে একটি সুস্থ্ জাতি ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে পরিবার থেকেই আন্দোলন শুরু হওয়া দরকার। মাদকের বিরুদ্ধে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এক সাথে কাজ করারও আহবান জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা আক্তারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পোরশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মঞ্জুর মোর্শেদ চৌধুরী। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাধকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো: ফজলুর রহমান। এছাড়াও সহকারি কমিশনার ভূমি জাকির হোসেন, থানা অফিসার ইনচার্জ জহুরুল হক, পোরশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন মোল্লা এবং নিতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক বক্তব্য রাখেন।
কর্মশালায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক প্রতিনিধিগণ, জনপ্রতিনিধিবৃন্দ এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ অংশ নেন।