খুলনা হতে মংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শন করলেন মন্ত্রী : এ বছর ডিসেম্বরে চালুর আশা প্রকাশ
খুলনা, ১৭ শ্রাবণ (১ আগস্ট) :
রেলপথ মন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক নির্মাণাধীন খুলনা হতে মংলা পোর্ট পর্যন্ত নতুন রেলপথ এবছর ডিসেম্বরে চালু হবে ।
মন্ত্রী আজ নির্মাণাধীন খুলনা হতে মংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ কাজ পরিদর্শনের সময় রূপসা রেল সেতু এলাকায় উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ ঘোষণা দেন ।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের এই প্রকল্পটির মেয়াদ ডিসেম্বর শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি সরেজমিনে দেখতে এসেছি । আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ ছিল রূপসা রেল সেতু নির্মাণ । সেটি নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে । এখন সেটির উপর ট্র্যাক নির্মাণ করা হবে। এ রেললাইনের বেশিরভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কাজ বাকি আছে। সিগনালিংয়ের কাজ চলমান। তিন চার মাসের মধ্যে সেটি সম্পন্ন হবে। কয়েকটি স্টেশনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে কয়েকটির কাজ বাকি আছে।
অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ছাড়াও এ রেললাইনটির উপকার পাবে ভারত, নেপাল ও ভুটান কারণ সমুদ্রপথে মংলা পোর্ট হতে পণ্য আমদানি রপ্তানির বিশাল একটা সুযোগ তৈরি করবে এ রেললাইনটি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এটি আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে । তিনি বলেন, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত আগামী বছর জুনে চালু হলে ট্রেনে কুষ্টিয়া হয়ে খুলনায় যোগাযোগ সম্ভব হবে । কাজেই তখন থেকেই আমরা এই লাইনটির উপকার পাবো। ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ কৃষি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
রেল ক্রসিং এর দুর্ঘটনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, ট্রেন তার নিজস্ব লাইনে চলে। অন্য কেউ এসে রেলকে ধাক্কা মারলে, ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার দায় রেলের নয় বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। এর জন্য আমাদের সচেতনতা জরুরি। পাশাপাশি ভাবে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে এবং যেখানে যার দায়িত্ব সেটা সঠিকভাবে পালন করতে হবে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, খুলনা হতে মংলা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি ভারতীয় অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে । এটি ৬৪ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ হচ্ছে। এই রেলপথ নির্মিত হলে মংলা পোর্টে আমদানি রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। বিভিন্ন অঞ্চলকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য পর্যটক আকৃষ্ট হবে। ফলে রেলওয়ে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির একটা সুযোগ তৈরি হবে। জুলাই মাস পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের ভৌত অগ্রগতি ৯৫ শতাংশ।
পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার, পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদারসহ প্রকল্প পরিচালক এবং সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
মেধাসম্পদের সুরক্ষা ও উন্নয়ন এসডিজি বাস্তবায়নে অবদান রাখবে: শিল্পমন্ত্রী
ঢাকা, ১৭ শ্রাবণ (১ আগস্ট) :
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, প্রতিযোগিতামূলক বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ দেশের উন্নয়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার মেধাসম্পদকে টেকসই উন্নয়নের অন্যতম মানদণ্ড ধরে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা ও সূচকসমূহ নির্ধারণ করেছে। মেধাসম্পদের সুরক্ষা ও উন্নয়ন এসডিজি বাস্তবায়নে অবদান রাখবে।
আজ রাজধানীর রমনাস্থ তথ্য ভবনে শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত ÔIntellectual Property Rights (IPR)Õ শীর্ষক সময়াবদ্ধ কৌশলপত্র Validation কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক মেধাকে কাজে লাগিয়ে সম্পদে পরিণত করে শিল্প উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করা দরকার। কারণ ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি’-ই একমাত্র প্রপার্টি, যার উৎস অসীম এবং সম্ভাবনা অফুরন্ত। এই সম্ভবনাকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটি আমাদের মেধাসম্পদ নীতিমালা এবং শিল্পনীতিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণের স্বার্থে আমাদের সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণে এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে আরো অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে।
মন্ত্রী আরো বলেন, যে চেতনাকে ধারণ করে রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছে, বিশ্ব মানচিত্রে এখন প্রয়োজন তার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা। এক্ষেত্রে মেধাসম্পদের বিকাশ ও সংরক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। আজ সময় এসেছে শিল্পায়নের, মেধাসম্পদ বিকাশ ও সংরক্ষণের ও নব উদ্ভাবন সৃষ্টিকে উৎসাহিত করার। আর এজন্য দরকার একটি সুপরিকল্পিত ‘ভিশন’ এবং প্রয়োজন একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা। তাই আজকে ৭টি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করে Intellectual Property বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের সীমিত সম্পদকে সমৃদ্ধ সম্পদে পরিণত করতে হবে।
শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্ত ঘোষ, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মোঃ মকবুল হোসেন পিএএ, সংস্কৃতি সচিব আবুল মনসুর এবং সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী চেম্বারের নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের ফলে বাংলাদেশের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি, পরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও মনিটরিং সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ‘Intellectual Property Rights (IPR)’ শীর্ষক সাবকমিটি গঠন করা হয়। উক্ত সাব কমিটির প্রণয়নকৃত সময়াবদ্ধ পরিকল্পনাসহ কৌশলপত্র আজকের কর্মশালায় উপস্থাপন করা হয়।
ইউরিয়া সারের দাম পুনর্নির্ধারণ, প্রতিকেজিতে বেড়েছে ৬ টাকা
ঢাকা, ১৭ শ্রাবণ (১ আগস্ট) :
ইউরিয়া সারের ব্যবহার যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে এবং চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে ডিলার পর্যায়ে ইউরিয়া সারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতিকেজি ১৪ টাকা হতে বৃদ্ধি করে প্রতিকেজি ২০ টাকা এবং কৃষক পর্যায়ে প্রতিকেজি ১৬ টাকা হতে বৃদ্ধি করে প্রতিকেজি ২২ টাকা পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার। পুনর্নির্ধারিত মূল্য আজ (১ আগস্ট ২০২২) থেকে কার্যকর হবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিকেজি ইউরিয়ার সারের বর্তমান দাম ৮১ টাকা। এর ফলে ৬ টাকা দাম বৃদ্ধির পরও সরকারকে প্রতিকেজিতে ৫৯ টাকা ভরতুকি প্রদান করতে হবে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে প্রতিকেজি ইউরিয়া সারের ভরতুকি ছিল মাত্র ১৫ টাকা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সারের মূল্য চার দফা কমিয়ে অত্যন্ত স্বল্প দামে পর্যাপ্ত সার কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। ডিএপি সারে শতকরা ১৮ ভাগ নাইট্রোজেন বা ইউরিয়া সারের উপাদান রয়েছে। সেজন্য ডিএপির ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের অপ্রয়োজনীয় ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য সরকার ডিএপি সারের মূল্য প্রতিকেজি ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকা করে কৃষকদের দিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে বিগত কয়েক বছরে ডিএপি সারের ব্যবহার দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে ডিএপি ব্যবহার হতো ৮ লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ১৬ লাখ টন।
ডিএপি সারের ব্যবহার বাড়ার ফলে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমার কথা। কিন্তু বাস্তবে ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমেনি বরং বেড়েছে। ২০১৯ সালে ইউরিয়া ব্যবহার হতো ২৫ লাখ টন, বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ২৬ লাখ ৫০ হাজার টন।
অন্যদিকে, বিগত এক বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম প্রায় ৩-৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দেশে সারে প্রদত্ত সরকারের ভরতুকিও বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। ২০২০-২১ অর্থবছরে যেখানে ভরতুকিতে লেগেছিল
৭ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা, সেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে লেগেছে ২৮ হাজার কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, চাহিদার বিপরীতে দেশে সব রকমের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। আমন মৌসুমে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত দেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা ৬ লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন, বিপরীতে বর্তমানে মজুত রয়েছে ৭ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন, যা প্রয়োজনের চেয়ে প্রায় ১ লাখ টন বেশি। অন্যান্য সার যেমন টিএসপির আমন মৌসুমে চাহিদা ১ লাখ ১৯ হাজার টন, বিপরীতে মজুত ৩ লাখ ৯ হাজার টন, ডিএপির চাহিদা ২ লাখ ২৫ হাজার টন, বিপরীতে মজুত ৬ লাখ ৩৪ হাজার টন এবং এমওপির চাহিদা ১ লাখ ৩৭ হাজার টন, বিপরীতে মজুত রয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার টন।
দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট চলছে বলে একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার করছে : ওবায়দুল কাদের
ঢাকা, ১৭ শ্রাবণ (১ আগস্ট):
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট চলছে বলে একটি চিহ্নিত মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার করছে ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
মন্ত্রী আজ মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এ সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর জ্বালানি সাপ্লাই চেইন অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি মূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি দেখা দেয়। পৃথিবীর প্রায় নব্বই শতাংশের বেশি দেশ প্রাথমিক জ্বালানির জন্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। আমদানিকারক দেশ হিসেবে এ পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। এই মুহূর্তে ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই চলছে জ্বালানি সংকট। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য তারা ব্যাপকভাবে কমিয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহার।
বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অনেক উন্নত দেশেও বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। এর অনিবার্য প্রভাব পড়েছে অর্থনীতি এবং উৎপাদন ব্যবস্থায়। এ সময় মন্ত্রী যুক্তরাজ্যের ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় ‘London narrowly avoided blackout as electricity prices surged last week’ শিরোনামে সাম্প্রতিক প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করেন, যেখানে বলা হয়েছে, The UK was forced to pay 5,000% higher than the typical price for electricity to prevent a power blackout in South-East London. এছাড়া তিনি নিউইয়র্ক শহরের মেয়র এরিক এডামসের একটি বক্তব্য তুলে ধরেন, যেখানে মেয়র বলেছেন, ‘We are in a financial crisis like you can never imagine…… Wall Street is Collapsing; we are in a recession’.
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনৈতিক অবরোধ, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস ও সারের মূল্য বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার নানামুখী সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের নানান দেশ অসহনীয় এবং আকাশচুম্বী মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে। উন্নত বিশ্বের মূল্যস্ফীতির হারের দিকে তাকালে বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের তীব্রতা টের পাওয়া যায়। যেখানে জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৯ দশমিক ১ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, জার্মানি ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, রাশিয়া ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ, তুরস্ক ৭৮ দশমিক ৬ শতাংশ, নেদারল্যান্ড ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ৩৯ দশমিক ৯ শতাংশ এবং পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি ২১ দশমিক ৩ শতাংশ, সেখানে বাংলাদেশে জুন মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। দেশের ভেতরে অনেকে শুধু মূল্যস্ফীতির কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের সতর্কতামূলক উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বাংলাদেশের অবস্থাই তুলনামূলকভাবে সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। যারা দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে দেখতে চায়, উন্নয়ন বিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রতিভূ তাদের উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে থাইল্যান্ড-বাংলাদেশ বৈঠক
ঢাকা, ১৭ শ্রাবণ (১ আগস্ট) :
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করা এবং বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড দ্বিপাক্ষিক স্বাস্থ্য সহযোগিতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আজ সকালে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক নেতৃত্ব দেন। থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। কিংডম অব থাইল্যান্ডের পক্ষে সেদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও উপ প্রধানমন্ত্রী Anutin Charnvirakul-সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বাংলাদেশের বিরাট সংখ্যক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবায় বর্তমান সরকারের উদ্যোগসমূহ উপস্থাপন করেন। মন্ত্রী এ সময় বর্তমান সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ, সাফল্যের সাথে কোভিড মোকাবিলা, কোভিড মহামারিতে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ধরে রাখাসহ সরকারের অন্যান্য সাফল্যসমূহ তুলে ধরেন।
থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও উপ প্রধানমন্ত্রী Anutin Charnvirakul কোভিড মহামারিতে বাংলাদেশ যেভাবে মোকাবিলা করে বিশ্বে নজির সৃষ্টি করেছে, অর্থনৈতিক সাফল্য ধরে রেখেছে তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি এ সময় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট কোভিড মোকাবিলার বিষয়টি বিস্তারিত জানার আগ্রহ প্রকাশ করলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন মেনে চলার পাশাপাশি নিজস্ব হেলথ প্রটোকল তৈরি করা, সফল টিকা কার্যক্রম ব্যাবস্থাপনা, টেলিমেডিসিন সেবা, স্বাস্থ্যবিধি মেইনটেইন করা, সময়োচিত সিদ্ধান্ত গ্রহণসহ স্বাস্থ্যখাতের উদ্যোগসমূহ তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাইল্যান্ডের চিকিৎসা সেবার গুণগত মানের প্রশংসা করেন এবং সে দেশের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উদ্যোগসমূহ সম্পর্কে জানার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। থাইল্যান্ডে মা ও শিশু মৃত্যু হ্রাসে কি কি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সে বিষয়েও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানতে চান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের আরো উন্নয়ন করতে থাইল্যান্ড সরকারের স্বাস্থ্যখাতের সার্বিক সহোযোগিতা প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী উভয় দেশের মা ও শিশু স্বাস্থ্য, বিভিন্ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত নার্স, টেকনোলজিস্টসহ চিকিৎসকদের উন্নত প্রশিক্ষণ বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি, যৌথ বিনিয়োগ, প্রাতিষ্ঠানিক স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন কৌশলসহ স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে থাইল্যান্ড সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে অটোমেটেড ও ডিজিটাইজড করা হবে : আইসিটি প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ১৭ শ্রাবণ (১ আগস্ট) :
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, শেয়ারবাজারের ফটকা কারবারি রোধে এবং বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে প্রযুক্তি সহায়তা দেবে আইসিটি বিভাগ।
প্রতিমন্ত্রী গতকাল রাজধানীর বারিধারায় ব্রোকারেজ হাউজ ‘আমায়া সিকিউরিটিজ লিঃ’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
পলক বলেন, দেশে অর্থনীতির জন্য পুঁজিবাজারকেও শক্তিশালী করতে হবে। এ লক্ষ্যে আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের কল্যাণে অটোমেটেড ও ডিজিটাইজড করা হবে। তবে এজন্য ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন চপ্পু’র সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আমায়া সিকিউরিটিজ চেয়ারম্যান ও কার সিলেকশন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম সেরনাবিয়াত, বারভিডার প্রেসিডেন্ট হাবিবুল্লাহ ডন, এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিম উদ্দিন, ডিএসই ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূঁইয়া, সিসিবিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম প্রমুখ।
মানব সেবা বড় ধর্ম : খাদ্যমন্ত্রী
নওগাঁ (সাপাহার), ১৭ শ্রাবণ (১ আগস্ট):
বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশে মাঝে মধ্যে উগ্রপন্থীরা এ চেতনাকে ভুলণ্ঠিত করে দেশকে ও সমাজকে বিতর্কিত করতে চায়। তাদের থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি গতকাল সাপাহার উপজেলার কলমুডাঙ্গা দারুল উলুম সালাফিয়্যাহ মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত শুকরিয়া সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কলমুডাঙ্গা দারুল উলুম সালাফিয়্যাহ মাদ্রাসার স্কলারশিপ নিবন্ধন প্রাপ্তি উপলক্ষ্যে এ শুকরিয়া সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বঙ্গবন্ধুর ন্যায় শেখ হাসিনাও মানুষকে ভালবাসেন। মানুষের কল্যাণে সকলকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মানব সেবা বড় ধর্ম। সেবার মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, মদিনা সনদ আমাদের সহিষ্ণুতা শিক্ষা দেয়। সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়তে আমাদের সহিষ্ণু আচরণ করতে হবে। অনেকেই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে ব্যস্ত থাকে, সমাজকে বিশৃঙ্খল করতে চায়। শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিতে তাদেরকে মোকাবিলারও আহবান জানান মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বেই সংকট চলছে। বাংলাদেশেও সমস্যা তৈরি হতে পারে, লোডশেডিং হতে পারে। জনগণকে ধৈর্যধারণ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে, একই সাথে বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে বহু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণ করেছেন। মাদ্রাসা এমপিওভূক্ত করেছেন। সকল ধর্মেরই উন্নয়ন করেছেন তিনি। তিনি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছেন, সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বাড়িয়েছেন। উন্নয়নের ছোঁয়া তিনি গ্রামেগঞ্জে পৌঁছে দিয়েছেন।
কলমুডাঙ্গা দারুল উলুম সালাফিয়্যাহ মাদ্রাসার সভাপতি ডক্টর গোলাম মর্তুজার সভাপতিত্বে শুকরিয়া সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা ১১ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদিস এর প্রধান উপদেষ্টা একেএম রহমতুল্লাহ। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদিস এর সভাপতি ড. আব্দুল্লাহ ফারুক সালাফি, বিশেষ আলোচক ছিলেন শায়খ মাহবুবুর রহমান মাদানী।
সাপাহার উপজেলা চেয়ারম্যান সাহজাহান চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন ও সাপাহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল আলম চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।