যারা দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় তাদের বর্জন করুন : রথযাত্রায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী
চট্টগ্রাম, ১৭ আষাঢ় (১ জুলাই):
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ বলেছেন, যারা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে লালন-পালন করে, সাম্প্রদায়িকতাকে নিয়ে রাজনীতি করে, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে যারা দেশে গণ্ডগোল পাকায় এবং যারা এই অসাম্প্রদায়িক দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়, অতীতে করেছিল, তাদেরকে আপনারা চেনেন, তাদেরকে বর্জন করুন।
আজ বন্দরনগরী চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড়ে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) আয়োজিত রথযাত্রা উৎসব উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ আহবান জানান।
ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ দাশ ব্রহ্মচারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম জেলার ডেপুটি কমিশনার মোঃ মমিনুর রহমান, চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাই-কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন ও ইসকন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী।
চট্টগ্রামে রথযাত্রা উৎসবের গৌরবোজ্জ্বল অতীত প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, রথযাত্রা চট্টগ্রামে একটি বড় উৎসব। যুগ যুগ ধরে এই রথযাত্রা উৎসব হয়ে আসছে। হাজার হাজার মানুষ রথযাত্রায় অংশ নেন। এই উৎসব নগরীর প্রতিটি মানুষ বুঝতে পারেন।
ড. হাছান বলেন, ‘বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নানাবিধ অনুষ্ঠান আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। এই রথযাত্রাও তাই। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে এসে অসম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনার জন্যই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল।’
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে এবং এ অপশক্তি মাঝে-মধ্যে সাপের মতো ছোবল মারার চেষ্টা করে। বিভিন্ন সময় সেই অপচেষ্টা হয়েছে। আমাদের সরকার সেগুলোকে কঠোর হস্তে দমন করেছে। যে কোনো সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে কঠোর হস্তে দমন করে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। সেজন্য দুর্গাপূজার সময় যেভাবে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিল, ত্বরিৎ গতিতে সেগুলো দমন করা হয়েছিল। সরকারের পক্ষে দ্রুত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।’
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, এই দেশে যারা সাম্প্রদায়িকতাকে নিয়ে রাজনীতি করে, তাদের রাজনীতির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা এবং ভারতবিরোধিতা। যখন নির্বাচন আসে তখন তারা সাম্প্রদায়িকতাকে নিয়ে আসে- বলতে শুরু করে ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে হিন্দুদের দল, আওয়ামী লীগ হচ্ছে ভারতের চর’। যদিও এই সমস্ত ট্যাবলেট আগের মতো কাজ করে না।’
সবাইকে সতর্ক করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্বাচন অতি সন্নিকটে। তারা আবারও একই স্লোগান নিয়ে হাজির হবে। আমাদের সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অনেক কাজ করেছে। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর পাকিস্তান আমলে আইন করা হয়েছিল- শত্রু সম্পত্তি আইন। দেশের তিন কোটি মানুষকে শত্রু আখ্যা দিয়ে কোনো আইন হতে পারে না। সে কারণে আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেই আইন পাল্টে দিয়েছেন। সেই আইনের সুযোগ নিয়ে যে সম্পত্তিগুলো বেহাত হয়েছিল সেগুলো ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। আরও নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যেমন পূজার সময়ের বরাদ্দ এই সরকারের সময়ে কতটুকু এবং আগের সরকারের সময়ে কতটুকু ছিল, তা দেখলেই বোঝা যায়। এখন চাকুরির ক্ষেত্রেও সচিবালয় থেকে শুরু করে বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, পুলিশ বাহিনী, প্রশাসন দেখলে বোঝা যায়, সেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হার এখন কতটুকু, আগে কতটুকু ছিল। এই বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, আমাদের সরকার সবার অধিকার নিশ্চিতের জন্য কি কাজ করছে। চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো সনাতন সম্প্রদায়ের পুলিশ কমিশনার নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যেটা আগে কখনো ছিল না। দেশের প্রধান বিচারপতিও সনাতন সম্প্রদায়ের একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল, যেটি আমাদের সরকার করেছিল।’
‘আপনারা ভাল করে জানেন এবং বোঝেন কারা এই দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়, আর দুর্যোগ দুর্বিপাকে প্রয়োজনের সময় কারা আপনাদের পাশে থাকে, সেই কথাটি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে’ বলেন আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
ড. হাছান বলেন, ‘কেউ স্বীকার করুক আর না করুক ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগ হয়েছিল সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে। হিন্দুদের জন্য একটি রাষ্ট্র আর মুসলিমদের জন্য আরেকটি রাষ্ট্র। কিন্তু বিভাজনের পর আমরা বাঙালিরা অনুধাবন করেছি, এই সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা আমাদের জন্য নয়। কারণ আমাদের প্রথম পরিচয় আমি বাঙালি। দ্বিতীয় পরিচয় আমি হিন্দু না মুসলিম, না বৌদ্ধ নাকি খ্রিস্টান। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পাকিস্তানে সেই সংস্কৃতি এবং পরিচয় যখন হুমকির মুখে পড়লো তখন জাতির পিতার নেতৃত্বে এই বাংলাদেশ রচিত হলো।’
‘যে অসম্প্রদায়িক চেতনা বুকে ধারণ করে আমাদের পূর্বসূরিরা দেশ রচনা করেছিলেন, লাল-সবুজ পতাকার জন্ম হয়েছিল, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে সেই চেতনার মূলে আঘাত হানা হলো’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর রাষ্ট্রের পরিচয় বদলে দেয়া হলো। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানানোর অপচেষ্টা হলো, অনেক ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা তার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর রাষ্ট্রের মূল চরিত্র ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়েছেন। গত সাড়ে ১৩ বছর ধরে দেশ পরিচালনার প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রের যে পরিচয় নষ্ট করা হয়েছিল সেটি আবার পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো অনেক কাজ বাকি। এখন বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমাদের সরকার জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করছে।’
পদ্মা সেতু কোরবানির আয়োজনে অভাবনীয় সুযোগ তৈরি করেছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
ঢাকা, ১৭ আষাঢ় (১ জুলাই):
পদ্মা সেতু কোরবানির আয়োজনে অভাবনীয় সুযোগ তৈরি করেছে এবং কোরবানিকেন্দ্রিক অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ।
আজ রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা : দেশীয় পশুতে কোরবানি, খামারিদের সমস্যা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি, আত্মবিশ্বাস, সততা, দৃঢ়তা ও দেশপ্রেমের অকল্পনীয় সিদ্ধান্তে পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে দিয়েছে পদ্মা সেতু। আগে কোরবানির পশু নিয়ে ঘাটে এসে দুই-তিনদিনও অপেক্ষা করতে হতো। পদ্মা সেতু দিয়ে যারা ঢাকা ও দেশের অন্যান্য জায়গায় কোরবানির পশু নিয়ে আসবেন তাদের জন্য পশু পরিবহনের ক্ষেত্রে অভাবনীয় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে একদিকে যেমন কোরবানির জন্য সম্প্রসারিত জায়গা হচ্ছে, অপরদিকে রাস্তা-ঘাটে ভয়ঙ্কর অবস্থাও তৈরি হচ্ছে না। আগে পথে অনেক সময় পশু ক্লান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে যেত, অনেক সময় মারাও যেত, সে অবস্থা থেকে এখন পরিত্রাণ হয়েছে। এভাবে পদ্মা সেতু কোরবানির আয়োজনে অকল্পনীয় সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন, এ বছর আমরা নিয়ম করে দিয়েছি, যিনি কোরবানির পশু নিয়ে আসবেন তিনি পশু ঢাকায় না সিলেটে কোথায় বিক্রি করবেন সেটা তার ব্যাপার। পথে কোনো বাজারে তাকে পশু নামাতে জোর করা যাবে না। খামারিদের আরেকটি সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে, বাড়িতে বা রাস্তায় পশু বিক্রি করলে তাদের কোনো হাসিল দিতে হবে না। কেউ খামারিদের বাজারে এনে পশু বিক্রিতে বাধ্য করতে পারবে না। কোরবানির পশু বাড়িতে বিক্রি করলে নিকটবর্তী বাজার ইজারাদার চাঁদা আদায়ের কথা বলতে পারবে না।
শ ম রেজাউল করিম আরও যোগ করেন, রাস্তাঘাট অথবা যেখানে যান চলাচলে বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি হয় সেখানে কোনো পশুর হাট বসতে পারবে না। নির্ধারিত জায়গায় হাট বসবে। প্রতিটি স্বীকৃত হাটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি মেডিকেল ব্যবস্থাপনা থাকবে। হাটে বিনামূল্যে পশু পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।
ক্রান্তিকালে খামারিরা যাতে টিকে থাকতে পারে সেজন্য রাষ্ট্র পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী এ সময় বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এবার বৃহত্তর সিলেট ও ঢাকার একটি অংশে প্রাণিসম্পদ খাতে যে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে, সেটা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রণোদনা দিয়ে খামারিরা যাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে এবং এ খাত যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি এম এ জলিল মুন্না রায়হানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ভেটেরিনারি হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিউল আহাদ ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন।
উন্নয়নের দিশারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ১৭ আষাঢ় (১ জুলাই):
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, অন্ধকারে নিমজ্জিত দেশকে আলোর দিশারী হিসেবে শেখ হাসিনা উন্নয়নের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর দক্ষ নেতৃত্বে নিজস্ব আর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। স্বপ্নের এ সেতু পাড়ি দিয়ে অল্পসময়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে পেরে বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে আত্মপরিচয় দানকারী একটি স্বাধীন দেশ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ; বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু।
প্রতিমন্ত্রী আজ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে দোয়া ও মোনাজাত শেষে এসব কথা বলেন।
এসময় বিআইডব্লিউটিএ’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আব্দুছ সাত্তার, প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) আব্দুল মতিন, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, অতিরিক্ত জেলা প্রসাশক এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.খায়রুল আলম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান বিশ্বাস, পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় জরুরী ডিজিটাল সংযোগ ব্যবস্থা প্রবর্তণে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের উদ্যোগ
ঢাকা, ১৭ আষাঢ় (১ জুলাই)
যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ সেবা সচল রাখতে জাতীয় জরুরী ডিজিটাল সংযোগ ব্যবস্থা প্রবর্তণের জন্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণে কাজ করছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। দুর্যোগকালীন সময়ে ব্যবহারের জন্য কমার্শিয়াল সেলুলার নেটওয়ার্কের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও পৃথক সেলুলার নেটওয়ার্ক স্থাপন, পোর্টেবল আইএমটি সলিউশন, স্যাটেলাইট ফোনের ব্যবহার এবং প্রকৃত অবস্থা বোঝার জন্য দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ড্রোন ব্যবহার এবং টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্তকরণ ইত্যাদি বাস্তবায়ণ কর্মপরিকল্পনার মূল লক্ষ্য।
ইতোমধ্যে সাম্প্রতিক বন্যায় ইন্টারনেটসহ টেলিযোগাযোগের ক্ষতিগ্রস্ত ২ হাজার ২৫টি সাইটের মধ্যে এক হাজার ৯’শ ৩৩টি সাইট সচল করা হয়েছে। বাকী ৯২টি সাইট দ্রুত সচল করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। বন্যায় সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারে অচল ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সচল রাখতে সেনাবাহিনী ১২টি এবং বিএসসিএল ২৯টি ভিস্যাব হাব স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এছাড়া হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোণা ও সুনামগঞ্জ জেলার ল্যান্ডফোন সংযোগ সচল করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে বিটিসিএল এর নেটওয়ার্ক ডাউন হয়। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণাসহ সিলেট বিভাগের অন্যান্য এলাকাসমূহে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ১০৫টি আইএসপির ৩৭৫ টি পপ এর মধ্যে ৩৩৯টি পপ কার্যকর রয়েছে। এছাড়া এনটিটিএন বাহন লিমিটেডের ২৯টি, ফাইভার এট হোম-এর ১৩৭ টি পপ কার্যকর আছে। সামিটের ২৬২টি পপের মধ্যে কার্যকর আছে ২০৫টি।
বন্যাদূর্গত এলাকায় টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সংযোগ পুণরায় চালু করার লক্ষ্যে ডাক ও টিলিযোগাযোগ বিভাগ মোবাইল নেটওয়ার্ক, অপটিক্যাল ফাইভার ট্রান্সমিশন ব্যবস্থা, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার ও ব্যান্ডউদথ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়সমূহ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য একটি সেল গঠন করে। বন্যাদুর্গত এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং বিজিবির কার্যক্রমকে সহজতর করার লক্ষ্যে বিটিআরসি’র উদ্যোগে ১৮টি টোল ফ্রি নাম্বার চালু করা হয়। এছাড়া টেলিটক সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের বন্যার্তদের জন্য ফ্রি ১৫মিনিট টকটাইম, ২০টি এসএমএস ও ৫০০ এমবি’র একটি প্যাকেজ প্রদান করে।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র গোলটেবিল বৈঠক
নিউইয়র্ক, ১ জুলাই:
নিউয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল গতকাল ‘বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের পঞ্চাশ বছরঃ বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশ’ বিষয়ক একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্র নীতির মূল প্রতিপাদ্য হলো ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়’। ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক বিবেচনায় বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান হারে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে বলে কনসাল জেনারেল যোগ করেন। বৈঠকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা দিক উঠে আসে যার মধ্যে প্রাধান্য পায় রোহিঙ্গা ইস্যু, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, ব্যবসাবাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা।
ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। দারিদ্রবিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলা এবং বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের ভূমিকা বিশ্বে স্বীকৃত ও প্রশংসিত হচ্ছে।
বৈঠকে মূলধারার যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী, একাডেমিক, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া ব্যক্তিবর্গ এবং দি সোসাইটি এন্ড ডিপ্লোমেটিক রিভিউ’র প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক গ্লোরিয়া স্টার কিনস উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী অতিথিবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করবে।
সাবেক সচিব মনোয়ার আহমেদের মৃত্যুতে অর্থমন্ত্রীর শোক
ঢাকা, ১৭ আষাঢ় (১ জুলাই):
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সচিব মনোয়ার আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী এক শোকবার্তায় বলেন, মনোয়ার আহমেদ ছিলেন একজন চৌকষ কর্মকর্তা। সততা এবং নিষ্ঠার সাথে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। মনোয়ার আহমেদের সফল ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
মন্ত্রী মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।