সাবেক রাষ্ট্রদূত মহিউদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
ঢাকা, ৬ আষাঢ় (২০ জুন) :
সাবেক রাষ্ট্রদূত মহিউদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
এক শোকবার্তায় মন্ত্রী বলেন, মহিউদ্দিন আহমদ ছিলেন একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও সাহসী কূটনীতিক। মরহুম মহিউদ্দিন আহমদের সাথে নিজের দীর্ঘকালের সুসম্পর্কের স্মৃতিচারণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মহিউদ্দিন ভাই ছিলেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একজন অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে মহিউদ্দিন আহমদের অবদান অবিস্মরণীয়। বিশেষ করে, ১৯৭১ সালে লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে এক সমাবেশে সরকারি চাকুরির মায়া ত্যাগ করে মহিউদ্দিন আহমদ পাকিস্তানের পক্ষত্যাগের সাহসী ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং ইউরোপে তিনিই প্রথম পাকিস্তানের পক্ষত্যাগ করা বাংলাদেশি কূটনীতিক। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাবেক কূটনীতিক মহিউদ্দিন আহমদের মৃত্যুতে দেশ এক অমূল্য সম্পদ-ব্যক্তিকে হারালো।
মন্ত্রী মরহুম মহিউদ্দিন আহমদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষা এবং ধারাবাহিক মূল্যায়ন উভয়ই থাকবে : শিক্ষামন্ত্রী
ঢাকা, ৬ আষাঢ় (২০ জুন) :
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে এখনো হয়তো অনেকের অনেক রকম সন্দেহ, সংশয় রয়েছে। অধিকাংশ মানুষ ভালো বলছেন, আবার অনেকেরই সংশয় রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন- পরীক্ষা থাকবে না। তাহলে কেমন হলো? পরীক্ষা থাকবে না, আসলে তা ঠিক নয়। অনেক পরীক্ষাই থাকবে, আবার অনেক পরীক্ষা থাকবে না। কিন্তু পরীক্ষা থাকবে না তার মানে মূল্যায়ন থাকবে না তা নয়। ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে।
মন্ত্রী আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ কার্যক্রমের পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ বলছেন- শিক্ষকদের হাতে ধারাবাহিক মূল্যায়নের অংশ থাকবে, তাহলে কী শিক্ষকদের হাতে জিম্মি হয়ে যাবো? শিক্ষকদের প্রতি আমাদের যেমন সম্মান থাকতে হবে, তেমনি আস্থাও রাখতে হবে। তিনি বলেন, কোথাও কোথাও আস্থাহীনতা ঘটে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সেখানে যেন সমস্যা না হয় সেটা দেখেই আমরা শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা সামগ্রিকভাবে শিক্ষার একটা গুণগতমানের পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। অনেকের চিন্তা হলো-করে করে শিখবে, তাহলে কী হবে? আমরা অনেক কিছু মুখস্থ করে শিখেছি। কিন্তু মনে রাখতে পারিনি। এই যে প্রয়োগ শিখবে, যা শিখবে তা ধারণ করতে পারবে। আমার মনে হয়, আমরা এই শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধু যেমন চেয়েছিলেন সেভাবে মানুষ করতে পারবো। ঔপনিবেশিক শিক্ষা নয়, স্বাধীন দেশের স্বাধীন শিক্ষা শেখাতে হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানমনস্ক হবে, মানবিক মানুষ হবে। ঠিক তেমন মানুষ আমরা গড়ে তুলতে পারবো।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ কার্যক্রমের মাধ্যমে যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শিক্ষার্থীরা জানতে পারছে, শুধু ইতিহাস পড়ে তা জানা যেতো না। আর সে কারণে নতুন শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিক্ষাক্রমকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।
অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ আবু বকর ছিদ্দীক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
নারী নেতৃত্ব সৃষ্টি ও ক্ষমতায়ন করতে পরিবারই প্রথম প্রতিষ্ঠান : ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা
কিগালি (রুয়ান্ডা), ৬ আষাঢ় (২০ জুন) :
নারী নেতৃত্ব সৃষ্টি করা অত্যন্ত কঠিন। পরিবার থেকেই নারীর নেতৃত্ব তৈরি ও নারীর ক্ষমতায়ন করতে হবে। কারণ পরিবারই প্রথম প্রতিষ্ঠান, যা তাদের কন্যা ও বোনদের মাঝে নেতৃত্ব সৃষ্টি ও ক্ষমতায়ন করতে পারে বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
আজ রুয়ান্ডার রাজধানী কিগালিতে আয়োজিত ‘৩য় কমনওয়েলথ উইমেন্স ফোরাম’ সম্মেলনের প্রথম দিনের ‘উইমেন ইন লিডারশিপ : বিয়ন্ড নাম্বারস’ সেশনে আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রুয়ান্ডার ফার্স্ট লেডি Jeannette Kagame। স্বাগত বক্তব্য দেন কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল Patricia Scotland QC।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারী নেতৃত্ব সৃষ্টিতে বড় বাধা হলো সামাজিক বাধা ও সচেতনতার অভাব। নারী ক্ষমতায়ন হলে সমাজের সকলে উপকৃত হবে। কারণ নারীরা কর্মক্ষেত্রে অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও সৎ। বিশ্বে যে সকল দেশে নারী সরকার প্রধান আছে, সেখানে নারীর ক্ষমতায়ন দ্রুত হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, বিরোধী দলীয় নেতা নারী ও সংসদীয় উপনেতা নারী, যা বিশ্বে বিরল উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশে নারী সচিব, বিচারক, মেজর জেনারেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও জাতিসংঘের অধীনে বাংলাদেশের নারীরা শান্তি রক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে পঞ্চাশটি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। এছাড়া স্থানীয় সরকার পর্যায়েও বিশ হাজার নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি রয়েছে।
‘উইমেন ইন লিডারশিপ : বিয়ন্ড নাম্বারস’ সেশনে যুক্তরাজ্যের চেরি ব্লেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা Cherie Blair, দক্ষিণ আফ্রিকার সমবায় বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী Thembisile Nkandimeng, যুক্তরাজ্যের এমপি Harriet Baldwin, নাইজেরিয়ার আমেরিকান ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট Margee ensign ও কমনওয়েলথ লোকাল গভর্নমেন্টের সেক্রেটারি জেনারেল Lucy Slack উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী পরে যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের স্ত্রী ও চেরি ব্লেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেরি ব্লেয়ারের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় চেরি ব্লেয়ার বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশকে যুক্তরাজ্যের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করে নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফর করার আগ্রহ প্রকাশ করেন ।
ওসমানী বিমানবন্দর পরিদর্শনে বিমান প্রতিমন্ত্রী
যাত্রী ও এয়ারক্রাফটের নিরাপত্তা বিবেচনায় নিয়ে বিমান চলাচলের সিদ্ধান্ত
ঢাকা, ৬ আষাঢ় (২০ জুন) :
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী বলেছেন, এপ্রোচ এলাকার বাতিতে কোনো সমস্যা না থাকলে এবং আর যদি বৃষ্টিপাত না হয়, বন্যার পানি আর না বাড়ে তাহলে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি উড়োজাহাজ উঠা-নামার জন্য দ্রুতই খুলে দেয়া হবে। যাত্রী ও এয়ারক্রাফটের নিরাপত্তা বিবেচনায় নিয়ে বিমানবন্দর খুলে দেয়ার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
চলমান বন্যায় বিমানবন্দরের অবস্থা ও আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষ্যে বিমানবন্দরের প্রস্তুতি সরেজমিনে দেখার জন্য প্রতিমন্ত্রী আজ সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বিমানবন্দরের রানওয়ে, এপ্রোচ এরিয়া ও টার্মিনালের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। এর আগে প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে আজ সিলেট আসেন। পরিদর্শনকালে তাঁর সাথে ছিলেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সদস্য (পরিচালন ও পরিকল্পনা) এয়ার কমোডর সাদিকুর রহমান চৌধুরী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরের এপ্রোচ এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও এই মুহূর্তেই বিমান চলাচল শুরু করা যাবে না। এপ্রোচ এলাকার বাতিগুলো ঠিকমতো কাজ করছে কি না তা পরীক্ষা করতে হবে। সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অভ্ বাংলাদেশের একটি টিম ইতোমধ্যে সিলেট বিমানবন্দরে এসেছে এটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য।
উল্লেখ্য, চলমান বন্যার কারণে রানওয়ে সংলগ্ন এপ্রোচ লাইট এলাকায় পানি উঠে যাওয়ার কারণে গত ১৭ জুন থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ উঠানামা বন্ধ রয়েছে । অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচলের পাশাপাশি সিলেট-লন্ডন আন্তর্জাতিক রুটেও ফ্লাইট পরিচালনা করা হয় এই বিমানবন্দর থেকে।
দুর্যোগে মানুষের পাশে নেই বিএনপি, শুধু বাগাড়ম্বর : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী
ঢাকা, ৬ আষাঢ় (২০ জুন) :
‘দুর্যোগ-দুর্বিপাকে বিএনপি মানুষের পাশে নেই, তারা শুধু বাগাড়ম্বরে আছে’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ ।
মন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতি মানুষের কল্যাণের জন্য, দেশ ও সমাজের সেবার জন্য। কিন্তু বন্যার মধ্যেও বিএনপি নেতারা ঢাকার নয়াপল্টন, প্রেসক্লাব দলীয় কার্যালয়ে বসে বসে শুধু বিবৃতি দেয়, বাগাড়ম্বর করে, দুর্গতদের পাশে নেই। এখন হয়তো আমাদের বক্তব্যের পর তারা কিছু ফটোসেশন করবে, কিন্তু সত্যিকার অর্থে মানুষের পাশে দাঁড়াবে না। অপরদিকে আমাদের নেতাকর্মীরা বন্যা শুরুর সাথে সাথে বঙ্গবন্ধুকন্যার নির্দেশে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, মানুষের জন্য প্রাণ দিয়েছে।’
আজ সচিবালয়ে সাংবাদিকরা বন্যা নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, বিএনপির নেতারা করোনাকালেও মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। তখনও আমাদের দলের নেতাকর্মীরাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল, ত্রাণ তৎপরতায় এবং স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী বিতরণে আমাদের দলের নেতাকর্মীরাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সে কারণে মন্ত্রিসভার সদস্যসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৮১ জন সদস্যের মধ্যে ৫ জন, উপদেষ্টামণ্ডলীর অনেকে এবং সংসদ সদস্যও মৃত্যুবরণ করেছে। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা দুর্যোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে দাঁড়ায় না, তারা করোনাকালে শুধু ফটোসেশন করেছে।’
‘যে কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্ঘুম রাত কাটান’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আরো আট-দশদিন আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেছিলেন যে, এবার দেশে বন্যা হতে পারে। তিনি আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ নন, তারপরও তার সাধারণ জ্ঞান থেকেই তিনি এটি বলেছিলেন। এবং দেখা গেলো যে, একদিনে এক হাজার মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে প্রশাসনের সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সেনাবাহিনীকে কাজে লাগিয়েছেন এবং আমাদের দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।’
‘আমাদের দলের নেতাকর্মীরা নিজেরাই বন্যাপ্লাবিত, বন্যার মধ্যে নিজেদের ঘরবাড়িই ডুবে গেছে এরপরও প্রশাসনের পাশাপাশি তারা বন্যার্তদের পাশে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন’ বলেন হাছান। তিনি বলেন, ‘আপনারা বিভিন্ন গণমাধ্যম, সামাজিক গণমাধ্যমে দেখেছেন, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও সেই রিপোর্ট করেছে যে পানি ঠেলে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ছাত্রলীগের একজন নেতা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।’
পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপির নানা মন্তব্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘পদ্মা সেতু তো তাদের জন্য যন্ত্রণা। বিএনপি-জামাত এবং যারা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিল তাদের জন্য তো একটি যন্ত্রণা-জ্বালার বিষয়। কারণ এই পদ্মাসেতু হোক তারা চায়নি। সুতরাং এই পদ্মাসেতু হয়ে যাওয়াতে জ্বালা আর উদ্বোধন হলে আরো বড় জ্বালা। তারা চায় না পদ্মা সেতু উদ্বোধন হোক। উদ্বোধন বানচাল করার জন্য তো তারা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করেছিল, অনেক ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করা হয়েছে। সেই জ্বালা থেকেই তারা এই সমস্ত কথা বলে।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য কোনো উৎসব করছে না, জনসভা এবং উদ্বোধন অনুষ্ঠান করছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে শুধু দু’পাড়ের মানুষের যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্যই বৃদ্ধি পাবে না, বন্যা মোকাবিলা করতেও সহায়ক হবে। যেহেতু পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ায় সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ আজকে উল্লসিত এবং সমগ্র দেশের মানুষ এই পদ্মা সেতুকে শুধু সেতু হিসেবে নেয়নি, এই সেতু আমাদের জাতির সক্ষমতার, সম্মানের, মর্যাদার প্রতীক, শেখ হাসিনার সক্ষমতার প্রতীক, তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের সক্ষমতার প্রতীক। ২৫ জুন সেখানে একটি জনসভা আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।’
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল স্রোতে আনা হচ্ছে : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী
ঢাকা, ৬ আষাঢ় (২০ জুন) :
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেছেন, দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন উন্নয়নের ছোঁয়ার বাইরে ছিল। প্রয়োজনীয় কর্মসূচি ও প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল স্রোতে আনা হচ্ছে।
আজ রাজধানীর আগারগাঁওস্থ সমাজসেবা অধিদফতর মিলনায়তনে বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন এবং আগামীতে প্রান্তিক পেশার উন্নয়নে করণীয় শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু।
মন্ত্রী বলেন, যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ ও পুঁজির অভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই তাদের আদি পেশা পরিবর্তন করেছে। অবশিষ্টরা যাতে নিজ পেশায় থেকে স্বাবলম্বী হতে পারে সে জন্য ‘বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প’বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭-২০২২ মেয়াদে দেশের ৮টি বিভাগের ২৭টি জেলার ১১৭টি উপজেলা/শহর ইউনিটে বিদ্যমান বিভিন্ন আদি পেশায় নিয়োজিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে কামার, কুমার, নাপিত, মুচি, বাঁশ-বেত পণ্য প্রস্তুতকারী ও কাঁসা-পিতল পণ্য প্রস্তুতকারীদেরকে নিয়ে ৭০ কোটি ৮৪ লাখ ২২ হাজার টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন’শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটির আওতায় অনলাইন শনাক্তকরণ জরিপের মাধ্যমে সারা দেশে প্রায় ৪ লাখ ২৫ হাজার প্রান্তিক পেশাজীবীকে শনাক্ত করা হয়েছে। আদি ক্ষুদ্র পেশায় নিয়োজিত ২৬ হাজার ৩৪৩ জন প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যেমন- কামার, কুমার, নাপিত, মুচি, বাঁশ-বেত পণ্য প্রস্তুতকারী ও কাঁসা-পিতল পণ্য প্রস্তুতকারীকে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাজের সুযোগ সৃষ্টি ও আত্মকর্মসংস্থানের ক্ষেত্র প্রস্তুতকরণ ও প্রান্তিকজনগোষ্ঠীর আদি পেশার টেকসই উন্নয়নে আর্থিক সহায়তার জন্য প্রকল্পের নির্বাচিত ২৬ হাজার ৩৪৩ জন উপকারভোগীকে মূলধন হিসেবে অনুদান প্রদান করা হয়েছে। প্রকল্প দলিল অনুযায়ী ঢাকায় একটি প্রান্তিক শিল্প প্রদর্শনী ও বিপণন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
ভূমির অবক্ষয় রোধে দেশে ব্যাপকহারে বনায়ন করছে সরকার : পরিবেশমন্ত্রী
ঢাকা, ৬ আষাঢ় (২০ জুন) :
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার ভূমির অবক্ষয় রোধে ব্যাপকহারে বনায়ন করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভূমি অবক্ষয় রোধ এবং খরা প্রশমন করে একটি ভূমি অবক্ষয়-নিরপেক্ষ দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বন উজাড় রোধ, বনাঞ্চল পুনরুদ্ধার, নতুন বন সৃষ্টি, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, ভূমির ক্ষয়রোধ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষায় বিভিন্ন প্রকল্প ও কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, জনগণ নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী অধিকহারে বৃক্ষরোপণ করলে এ কাজে সফল হবে বাংলাদেশ।
বিশ্ব মরুময়তা ও খরা প্রতিরোধ দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে আজ পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলের কিছু এলাকায় মরুকরণের প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই ভূমিক্ষয় রোধে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে এর মোকাবিলায় সবাইকে কাজ করতে হবে। জাতিসংঘ মরুময়তা রোধ কনভেনশন নির্ধারিত এবারের দিবসের প্রতিপাদ্যের আলোকে মরুকরণ ও খরার বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা গ্রহণ করলে ইতিবাচক ফল পাওয়া বলে আমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, জাতিকে রক্ষা করে উন্নয়ন করতে হবে। সকল প্রকার দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক প্রফেসর ডক্টর আব্দুল হামিদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা গবেষণাগারের পরিচালক ডক্টর মু সোহরাব আলি। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডক্টর আমীর জাহিদ এবং বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল লতিফ।
নেত্রকোনা জেলার জন্য আরো একশত মেট্রিক টন চাল, নগদ টাকা ও শুকনো খাবার বরাদ্দ
ঢাকা, ৬ আষাঢ় (২০ জুন) :
বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে মানবিক সহায়তা হিসেবে বিতরণের লক্ষ্যে নেত্রকোনা জেলার জন্য আরো একশত মেট্রিকটন চাল, দশ লাখ নগদ টাকা এবং তিন হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে আজ এ বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
এর আগে দেশের ১১টি জেলায় সাম্প্রতিক বন্যায় মানবিক সহায়তা হিসেবে জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে ১৭ মে থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ২ হাজার ১২০ মেট্রিক টন চাল, তিন কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং ৬৮ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সিলেট জেলায় এক হাজার দুইশ’ মেট্রিকটন চাল, এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং ২৫ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট। সুনামগঞ্জ জেলায় ৭২০ মেট্রিক টন চাল, এক কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং ১৭ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট। নেত্রকোনা জেলায় একশত মেট্রিক টন চাল, ২০ লাখ টাকা এবং ৫ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট। রংপুর জেলায় তিন হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট। নীলফামারী জেলায় ৫ লাখ টাকা এবং ৩ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট। কুড়িগ্রাম জেলায় ১০ লাখ টাকা এবং এক হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট। হবিগঞ্জ জেলায় ১০ লাখ টাকা এবং ২ হাজার শুকনো অন্যান্য খাবারের প্যাকেট। মৌলভীবাজার জেলায় একশত মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকা এবং ২ হাজার শুকনো অন্যান্য খাবারের প্যাকেট। শেরপুর জেলায় ১০ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট। জামালপুর জেলায় ৪ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট। কিশোরগঞ্জ জেলায় ২ হাজার শুকনো অন্যান্য খাবারের প্যাকেট।
বরাদ্দকৃত নগদ অর্থ শুধু আপৎকালীন সময়ে বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে মানবিক সহায়তা হিসেবে বিতরণ করতে হবে।
‘বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোল রুম স্থাপন
ঢাকা, ৬ আষাঢ় (২০ জুন) :
‘বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের ঠিকানা : পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, ভবন-৬, রুম নং-৪১৪। মোবাইল : ০১৩১৮২৩৪৫৬০। কন্ট্রোল রুম সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে’। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়