বাঙালির মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু : আইনমন্ত্রী
ঢাকা, ২৩ শ্রাবণ (৭ আগস্ট) :
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু একজন ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। বাঙালি জাতির প্রতি তাঁর পরম ভালোবাসা ছিল। তিনি মনে করতেন, বাঙালির মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব তাঁর এবং ঠিক সেভাবেই তিনি বাঙালির মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।
আজ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭ তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালনের প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বাঙালিরা কী করলো আর না করলো তাতে বঙ্গবন্ধুর কিছু আসে যায় না। বরং বাঙালিরা যদি বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে স্মরণ করে, শ্রদ্ধা জানায় তাহলে বাঙালি জাতির উন্নতি হবে। বাঙালিরা জাতি হিসেবে একটি ভালো জায়গায় পৌঁছাবে।
মন্ত্রী জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে গতানুগতিক আয়োজনের বাইরে কিছু ভিন্নধর্মী কাজ করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে পরিষ্কারভাবে জানানো দরকার, একজন ফকির হত্যার বিচার হলেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বিচার দীর্ঘ ২১ বছর বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। এজন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ ও আইন জারি করা হয়েছিল।
শোক দিবসের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনে কী করে গেছেন এবং আজকের বাস্তবতায় তার প্রাসঙ্গিকতা কী- সেটা নিয়ে আলোচনা করার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। এবছর বড় পরিসরে শোক দিবসের অনুষ্ঠান করার নির্দেশ দেন এবং অনুষ্ঠানমালার বিষয় ও সময়সূচি নির্ধারণ করে দেন। সে মোতাবেক আইন মন্ত্রণালয় ১৬ আগস্ট এতিম খানায় খাবার বিতরণ করবে এবং ২১ আগস্ট দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করবে।
মন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মোঃ মইনুল কবির, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মোঃ গোলাম সারওয়ার, নিবন্ধন অধিদফতরের মহাপরির্শক শহীদুল আলম ঝিনুক, অতিরিক্ত সচিব হাফিজ আহমেদ চৌধুরী, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা, উম্মে কুলসুম, কাজী আরিফুজ্জামান ও ড. জাকেরুল আবেদীন বক্তব্য প্রদান করেন।
জাতীয় জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদান অপরিসীম : সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ২৩ শ্রাবণ (৭ আগস্ট) :
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, জাতীয় জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অপরিসীম। তিনি ঢাকা জাদুঘরকে জাতীয় জাদুঘরে রূপান্তরে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন এবং জাতীয় জাদুঘরের জন্য জমি বরাদ্দ প্রদান করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছরের শাসনামল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়- এমন কোনো আইন নেই যা তিনি প্রণয়ন করে যাননি। আমরা যখনই কোনো নতুন আইন প্রণয়ন করতে যাই, দেখা যায় বঙ্গবন্ধু ইতোমধ্যে তা প্রণয়ন করে গেছেন। এতেই বোঝা যায়- বঙ্গবন্ধু কতটা বিচক্ষণ ও সুদূরপ্রসারী চিন্তার অধিকারী ছিলেন। যুগের প্রয়োজনে আমাদের সেসব আইন শুধুমাত্র পরিবর্ধন, পরিমার্জন ও সংস্করণ করতে হয়।
প্রতিমন্ত্রী আজ রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ১০৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাদুঘর আয়োজিত ‘ঢাকা থেকে জাতীয় জাদুঘর: রূপান্তরের ইতিবৃত্ত’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাদুঘরকে আজকের পর্যায়ে উন্নীতকরণের জন্য যে দু’জনের নাম উল্লেখ না করলেই নয়, তাঁরা হলেন নলিনীকান্ত ভট্টশালী ও ড. এনামুল হক, যাদের মধ্যে ড. এনামুল হক কিছুদিন আগে প্রয়াত হয়েছেন। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতাভরে শ্রদ্ধা জানাই। প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতীয় জাদুঘরে প্রায় ১ লাখ নিদর্শন রয়েছে যার মধ্যে আমরা মাত্র ৫ শতাংশ প্রদর্শন করতে পারি। সেজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক জাতীয় জাদুঘরকে আধুনিকায়ন করার পদক্ষেপ নিয়েছি। আশা করছি, শীঘ্রই এ প্রকল্প অনুমোদিত হবে। তিনি বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গ্যালারির সংখ্যা বাড়ানো যাবে এবং আরো অধিক নিদর্শন প্রদর্শন করা যাবে।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদের সদস্য সাবেক সচিব উজ্জ্বল বিকাশ দত্ত।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোকাম্মেল এইচ ভূঁইয়া। আলোচনা করেন ওয়াইল্ডটিমের প্রধান নির্বাহী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কীপার শিহাব শাহরিয়ার।
প্রতিমন্ত্রী পরে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী গ্যালারিতে জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি নিদর্শন, বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের দুর্লভ আলোকচিত্র ও বঙ্গবন্ধুর লেখা বিভিন্ন গ্রন্থ নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু: মুক্তির অগ্রনায়ক’ শীর্ষক বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন এবং প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন।
বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন, শেখ হাসিনা দিচ্ছেন অর্থনৈতিক মুক্তি : বাণিজ্যমন্ত্রী
ঢাকা, ২৩ শ্রাবণ (৭ আগস্ট):
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বা ঙালি জাতির মুক্তির জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন, আজ তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। তিনি দিন-রাত কাজ করছেন দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। ভারত পাকিস্তান ভাগের সময়ই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তান বাঙালি জাতির জন্য সৃষ্টি হয়নি। এর মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু তখনই বাঙালি জাতির স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ শুরু করেন। ছয়দফা ঘোষণার মাধ্যমে তা পরিষ্কার হয়ে যায়। ছয় দফার মধ্যে তিন দফাই ছিল বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির বিষয়ে। ছয় দফার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু পুরো বাঙালি জাতিকে এক কাতারে দাঁড় করিয়েছিলেন।
আজ ঢাকায় এফবিসিসিআই অডিটোরিয়ামে দ্য ফেডারেশন অভ্ বাংলাদেশ চেম্বার অভ্ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর অর্থনীতি ও বাণিজ্য ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেই বঙ্গবন্ধু দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ শুরু করেন। কিন্তু তিনি বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির কাজ শেষ করতে পারেননি। আজ তাঁরই কন্যা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। চলমান বিশ্বের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সরকার বাধ্য হচ্ছে। এগুলো খুবই সাময়িক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে, দেশ স্বাভাবিক গতি ফিরে পাবে। দেশে স্বাধীনতা বিরোধীরা এখনও সক্রিয় আছে। তারা বিভিন্নভাবে দেশের ক্ষতি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ইস্যুতে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমরা দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করে যাবো।
এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোর্শেদ আলম এবং এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি মোঃ শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এম মাহফুজুর রহমান, ঢাকা চেম্বার অভ্ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র প্রেসিডেন্ট রিজওয়ান রহমান, এফবিসিসিআই’র প্যানেল উপদেষ্টা ড. মোস্তফা আবিদ খান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিম উদ্দিন।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে আইনি ব্যবস্থা : সেতুমন্ত্রী
ঢাকা, ২৩ শ্রাবণ (৭ আগস্ট) :
পুনর্নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় নিজ বাসভবনে ব্রিফিংকালে একথা জানান।
ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া সমন্বয়ে গতকাল বিআরটিএ-তে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবং বিআরটিএ-এর চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনসহ অংশীজনদের বৈঠকে ভাড়া পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয় এবং সে আলোকে ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, অতীতের মতো এবারও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জনস্বার্থে শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন।
উল্লেখ্য, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ৭ নভেম্বর ২০২১ তারিখের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে প্রতি যাত্রী প্রতি কিলোমিটার সর্বোচ্চ ভাড়া ১ দশমিক ৮০ টাকার স্থলে ২ দশমিক ২০ টাকা; ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাসের ক্ষেত্রে ২ দশমিক ১৫ টাকার স্থলে ২ দশমিক ৫০ টাকা ও ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী মিনিবাস এবং ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) এর আওতাধীন জেলার (নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলা) অভ্যন্তরে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাস উভয় ক্ষেত্রে প্রতি যাত্রী প্রতি কিলোমিটার ভাড়া ২ দশমিক ০৫ টাকার স্থলে ২ দশমিক ৪০ টাকা। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ দশমিক ০০ টাকা এবং মিনিবাসের সর্বনিম্ন ভাড়া
৮ দশমিক ০০ টাকা।
এ ভাড়া বৃদ্ধি গ্যাসচালিত মোটরযানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না এবং ভাড়ার হার প্রতিটি বাস ও মিনিবাসের দৃশ্যমান স্থানে আবশ্যিকভাবে টাঙ্গিয়ে রাখতে হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
অর্থনীতিকে সহনশীল রাখতেই তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে সরকার : কৃষিমন্ত্রী
কুমিল্লা, ২৩ শ্রাবণ (৭ আগস্ট):
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দেশের অর্থনীতিকে সহনশীল ও স্বস্তির মধ্যে রাখতেই তেলের দাম বাড়াতে সরকার বাধ্য হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক। একইসাথে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম আরো কমলে দেশেও তেলের দাম কমানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আজ কুমিল্লা শহরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সিলেট, কুমিল্লাসহ পাহাড়ি অঞ্চলে তেল ফসল ও ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি শীর্ষক কর্মশালা শুরুর আগে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ কর্মশালার আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে তেলের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর জন্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ আন্তর্জাতিক সংকট দায়ী। এই সংকটের কারণে সারা পৃথিবীতেই অর্থনীতি অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। দেশে এ অস্থিরতা মোকাবিলা করার জন্য সরকার তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। তেলে এত ভর্তুকি দিলে আমাদের ফরেন রিজার্ভ অনেক কমে যাবে, তখন সারা জাতি হুমকির মধ্যে পড়বে। তার চেয়ে বর্তমানে সাবধান হওয়া ভাল, সাশ্রয়ী ও কৃচ্ছ্রসাধন করা ভাল। বর্তমানে একটু কষ্ট সাময়িকভাবে মেনে নিয়ে যাতে আমরা সাবধান হই। দেশটাকে তো আমরা ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না। সেজন্য, সরকার তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে যাতে তেলের ব্যবহার কিছুটা হলেও কমে এবং আমরা যাতে শ্রীলঙ্কার মতো বিপর্যয়ে না পড়ে সহনশীল অবস্থায়ও টিকে থাকতে পারি।
তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষিতে প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়েনি, ফলে বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্রে কোনো সমস্যা হবে না। তবে সার্বিকভাবে কৃষিতে কিছুটা প্রভাব পড়বে। কৃষি উৎপাদন কমবে না, তবে কৃষকের লাভ কমে আসবে। বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে একটু কষ্ট হলেও, আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে তা মোকাবিলা করতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, সিলেট ও পাহাড়ি অঞ্চলে অনেক জমি পতিত থাকে। দেশে খাদ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে কোনোক্রমেই এসব জমি পতিত রাখা যাবে না। পাশাপাশি ধানের উৎপাদন না কমিয়ে বিদ্যমান শস্যবিন্যাসে তেল ফসলকে অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। সেজন্য কৃষি কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।
কৃষিসচিব মো: সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরফানুল হক রিফাত, ব্রি’র মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, বিএডিসি’র চেয়ারম্যান এএফএম হায়াতুল্লাহ, বারি’র মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
করোনার দ্বিতীয় ডোজ না দিলে বুস্টার ডোজ পাবেন না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
ঢাকা, ২৩ শ্রাবণ (৭ আগস্ট) :
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা কিছুটা কমেছে। তবে, এখনো করোনায় দু-চারজন মারা যাচ্ছে। যারা মারা যাচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই করোনার টিকা নেননি। এখন টিকা না নিলে, হাতে মজুদ টিকার মেয়াদ দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে। মেয়াদ থাকতে দ্বিতীয় ডোজ টিকা না নিলে তারা পরবর্তীতে আর বুস্টার ডোজ নিতে পারবে না।
আজ রাজধানীর মহাখালীতে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম)-এ ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ’ পালন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।
দেশে ৫-১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য করোনার টিকা কার্যক্রম এ মাসের ১১ তারিখ প্রথমবার এবং ২৬ তারিখ দ্বিতীয়বার দেয়ার ঘোষণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের হাতে এই মুহুর্তে শিশুদের জন্য প্রায় ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আছে। এগুলো দিয়ে আমরা ৫-১১ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ১৫ লাখ শিশুকে টিকা দিতে পারব। পরবর্তীতে শিশুদের জন্য আরো টিকা আনা হবে।
অনুষ্ঠানে শিশুদের জন্মের পর থেকেই মায়ের দুধ পান করানোর উপর গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। দেশে এখন ৭০ ভাগ দুগ্ধজাত শিশু মায়ের দুধ পান করলেও প্রায় ৩০ ভাগ শিশু মায়ের দুধ পান করে না। কেন করছে না সে বিষয়টিতে আরো গুরুত্ব দিতে মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কল-কারখানায় মায়েদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার চালুর কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের মহাপরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর এবং নিপসম-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়েজিদ খুরশীদ রিয়াজ ও জাতীয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের জাতীয় পুষ্টিসেবা লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তাফিজুর রহমান।
উল্লেখ্য, সারা বিশ্বের সাথে বাংলাদেশেও ১৯৯২ সাল থেকে প্রতি বছর ১-৭ আগস্ট বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ পালিত হয়ে আসছে এবং ২০১০ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ জাতীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী World Alliance for Breastfeeding Action কর্তৃক এ বছর বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ‘মাতৃদুগ্ধ পান এগিয়ে নিতে, শিক্ষা ও সহযোগিতা হবে বাড়াতে’।