অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন উদ্ধারকারী জাহাজ সংগ্রহ করা হবে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
গজারিয়া (মুন্সিগঞ্জ) ২৮ মে ২০২২ :
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে প্রতিনিয়ত সজাগ থাকতে হয়। তারপরও দুর্ঘটনা ঘটে। উদ্ধারকর্মীরা দক্ষতার সাথে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
আমাদের বিআইডব্লিউটিএর মাত্র ৪টি উদ্ধারকারী জাহাজ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৬৪ সালের একটি, ৮৩ সালের একটি। এ দু’টির উদ্ধারক্ষমতা ৫০-৬০ টন। উদ্ধার কার্যক্রম আরো বেশি ত্বরান্বিত করতে আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৩ সালে ২৫০ টন ওজনের দু’টি জাহাজ সংগ্রহ করে। সুপরিকল্পিত ও সমন্বিতভাবে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিআইডব্লিউটিএকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
ফলে উদ্ধার কার্যক্রম আরো সমন্বিতভাবে করা যাচ্ছে। অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযান আরো গতিশীল করতে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন উদ্ধারকারী জাহাজ সংগ্রহ করা হবে। উদ্ধারকর্মীদের দেশে-বিদেশে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। উদ্ধারকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশপ্রেম ও মানবতা নিয়ে কাজ করেন। মানুষ তাদেরকে সম্মানের সাথে দেখে। এ ধরনের মহড়ার মধ্য দিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম আরো বেশি সফলতা পাবে। দুর্ঘটনা চাই না। তারপরও প্রস্তুত থাকতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় বিআইডব্লিউটিএ আয়োজিত ‘নৌদুর্ঘটনা কবলিত নৌযান উদ্ধার মহড়া কার্যক্রম’ পরিদর্শন ও বার্ষিক মহড়ার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর কে এম জালাল উদ্দিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
তিনদিনব্যাপী এ মহড়ায় নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ’র ডুবুরিরা অংশ নেয়।
২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিবেন: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
চাঁদপুর ২৮ মে ২০২২ :
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু সরকারের যে সফলতা, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে দেশ আজ অন্যমাত্রায় উপনীত হতো। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে হত্যা করতে চেয়েছিল। সেই কলঙ্কিত অধ্যায় ও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশ অন্ধকার ও দুর্নীতির যুগে প্রবেশ করে।
২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর পরই নেওয়া হয়েছে নানাবিধ উদ্যোগ। বিলুপ্ত ও বেদখল হওয়া নদীগুলোকে পুনরুদ্ধার করে খননের মাধ্যমে প্রবাহমান করা এবং নৌপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের কঠিন কাজে প্রধানমন্ত্রী নিজেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং হারিয়ে যাওয়া নৌপথ উদ্ধার ড্রেজার সংগ্রহের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সরকার এ পর্যন্ত ৪০টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছে; আরো ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। নির্বাচনি মেনিফেস্ট অনুযায়ী ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের মধ্যে ৭ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খনন হয়েছে; বাকি কাজ চলমান রয়েছে। আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করব।
প্রতিমন্ত্রী আজ চাঁদপুরে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২২’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। “প্রশিক্ষিত জনবল ও নিরাপদ জলযান, নৌ নিরাপত্তায় রাখবে অবদান” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৯মে থেকে দেশব্যাপী নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ ২০২২ শুরু হয়।
নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর এ জেড এম জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল, জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, নৌযান মালিক মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম ও আব্দুর রব ভূইয়া, বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুল হক, বাংলাদেশ কোস্টাল শিপ ওনার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ মাহফুজ হামিদ এবং নৌপরিবহন অধিদফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এন্ড শিপ সার্ভেয়ার মোঃ মনজুরুল কবীর।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চাঁদপুরে আন্তর্জাতিকমানের নদীবন্দর স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের বালু দরকার; তবে অপরিকল্পিতভাবে নয়। অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনকারীরা যত শক্তিশালী হোক না তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিবে। তিনি বলেন, চাঁদপুরে নৌপরিবহন অধিদফতরের অফিস খোলা হয়েছে। নৌযানের ফিটনেস ও নৌযান সংক্রান্ত কোন কাজের জন্য ঢাকায় যেতে হবে না। সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদীর প্রবাহ বজায় রাখতে হবে। নতুবা নদীমাতৃক বাংলাদেশকে রক্ষা করা যাবে না। প্রশিক্ষিত নৌযান শ্রমিক তৈরিতে সরকার কাজ করছে। পাঁচটি মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী নৌযান মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যতদিন পর্যন্ত প্রশিক্ষিত জনবল ও নিরাপদ নৌযান প্রতিষ্ঠিত হবে না ততদিন পর্যন্ত নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহের স্লোগান থাকবে “প্রশিক্ষিত জনবল ও নিরাপদ জলযান, নৌ নিরাপত্তায় রাখবে অবদান।” অনুষ্ঠানে ‘আধুনিক যাত্রীবাহী নৌযান ডিজাইন’ এবং ‘অভ্যন্তরীণ নৌযান নাবিক প্রশিক্ষণ, পরীক্ষা গ্রহণ, সনদায়ন’ বিষয়ক দু’টি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী পরে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মাঝনদীতে বিআইডব্লিউটিএ আয়োজিত “নৌদুর্ঘটনা কবলিত নৌযান উদ্ধার মহড়া কার্যক্রম’ পরিদর্শন ও তিনদিনব্যাপী বার্ষিক মহড়া” ২০২২ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দেন।