বঙ্গমাতা বিশ্বের নারীদের কাছে অনুকরণীয় : পানি সম্পদ উপমন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেছেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবন থেকে শুধু বাংলাদেশেরই নয়, বিশ্বের সব নারীরাও শিক্ষা নিতে পারবে। তিনি ছিলেন সংকটে-সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্ভীক সহযাত্রী। বঙ্গবন্ধু যখন জেলে থাকতেন তখন বঙ্গমাতা সন্তান লালন-পালন, শ্বশুর-শাশুড়ীর সেবা যত্ন করার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দেখভাল করতেন। ছাত্রলীগকে তিনি বিশেষভাবে দেখাশুনা করতেন ও বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে ছাত্রলীগকে সকল প্রকার দিকনির্দেশনা দিতেন। তাদের আর্থিক সহায়তাও করতেন। বঙ্গবন্ধুর সকল সংগ্রামেই তিনি পাশে থেকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন।
বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা ও সখিপুর থানা মহিলা আওয়ামী লীগ এবং যুব মহিলা লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে ঢাকায় তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গমাতার কাছ থেকে পরিশুদ্ধ বাঙালি হওয়া এবং মানবিকতার মা হবার শিক্ষা পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গমাতার কাছে থেকেই নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। একজন আদর্শ নারী হিসেবে বঙ্গমাতা সারা বিশ্বে অতুলনীয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন নড়িয়া পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খোকন, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাবেয়া আক্তার, সাধারণ সম্পাদক সামসুন্নাহার মায়া, যুব মহিলা লীগের সভাপতি আসমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক জুলিয়া হাসান পারুল, সখিপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মানিক সরকার, সহ-সভাপতি কোহিনুর সুলতানা দোলা, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারা বেগম, সাধারণ সম্পাদক সালমা বেগম, যুব মহিলালীগের সভাপতি রোকসানা চৌকিদার ও সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদা আক্তার প্রমুখ।
রাষ্ট্রপতির কাছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২১ পেশ
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেদের উদ্যোগে মানবাধিকার রক্ষায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে জোরালো ভূমিকা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।
আজ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন- ২০২১ পেশ করতে গেলে তিনি এ নির্দেশ দেন। সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধিদল কমিশনের সার্বিক কার্যক্রম এবং বার্ষিক প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।
রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের নির্দেশ দেন। তিনি মানবাধিকার সম্পর্কে তৃণমূল পর্যায়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন। মানবাধিকার রক্ষায় সরকারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শদানের পাশাপাশি এগুলোর বাস্তবায়নে মানবাধিকার কমিশনকে কাজ করারও নির্দেশনা দেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির সচিবগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর সকল আন্দোলন, সংগ্রামের প্রেরণার উৎস ফজিলাতুন নেছা মুজিব : আইসিটি প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর সকল আন্দোলন, সংগ্রামের নেপথ্যের প্রেরণাদায়ী এবং প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস মহীয়সী নারী ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো অনুসরণ করে তাঁর কর্মকাণ্ডকে পূর্ণতা দিয়েছেন বেগম মুজিব।
প্রতিমন্ত্রী আজ আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে বিসিসি মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আইডিয়া প্রকল্পের আওতায় নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বিসিসির ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার, ই-ক্যাব এর সভাপতি শমী কায়সার, উইমেন এন্ড কমার্স সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা।
তিনি বলেন, বঙ্গমাতার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাদামাটা জীবনযাপন করেন।
নারী উদ্যোক্তাদের ব্যর্থ হওয়ার হার পুরুষদের চেয়ে কম মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মায়েরা-মেয়েরা মিতব্যায়ী-সাশ্রয়ী। আমি মনে করি এই উদ্যোক্তাদের দেয়া অনুদান বিফলে যাবে না। অনুদান অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটাই শেষ নয়; প্রতিবছর ৮ আগস্ট ১ হাজার বঙ্গমাতা অদম্য উদ্যোক্তাকে অনুদান দেয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প পূরণে ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা তৈরি করতে নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, কো-ওয়ার্কিং স্পেস ও সিডমানি দিয়ে সর্বাত্মক কাজ করবে আইসিটি বিভাগ। উক্ত অনুষ্ঠানে ২৫০ জন নারী উদ্যোক্তার প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে এককালীন অনুদান প্রদান করা হয়।
বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রামে বঙ্গমাতার অবদান অসামান্য : শ্রম প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, বাঙালি জাতির মুক্তির সংগ্রামে বঙ্গমাতার অবদান অসামান্য। জাতির পিতা শেখ মুজিবের বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠার জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ বঙ্গমাতার।
‘জাতির রক্তে প্রেরণার শিখা জননী, বঙ্গমাতা মমতাময়ী আজ দীপালোকে তোমার আসন পাতা’ এ চেতনাকে সামনে রেখে আজ সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ জাতির মুক্তি এবং এ দেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামের সহযোদ্ধা ছিলেন বঙ্গমাতা। সবসময় তিনি বঙ্গবন্ধুকে সাহস যুগিয়েছেন। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য বঙ্গমাতার যে আত্মত্যাগ, দেশের মানুষ তার খুব কমই জানতে পেরেছে। সেজন্য শ্রম প্রতিমন্ত্রী বঙ্গমাতার জীবনী নিয়ে গবেষণার আহ্বান জানান। এতে বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদান সম্পর্কে অজানা অনেক কিছু জানা যাবে।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ এহছানে এলাহী, শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ ফারুক, নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ শাহেনুর, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. সেলিনা আকতার, মাসুদ করিম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মোঃ নাসির উদ্দীন আহমেদ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় তহবিলের মহাপরিচালক ড. মোল্লা জালাল উদ্দীনসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনা শেষে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শ্রম মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন দপ্তর অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মারীগণ বনানী কবরস্থানে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি স্বপ্নের সাথে স্বপ্ন মিলিয়ে বঙ্গমাতা অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছেন : নৌ-প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আজ ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বণিক ও বেগম লায়লা জেসমিন এবং নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর মোঃ নিজামুল হক।
বক্তারা বলেন, বাঙালি জাতির স্বাধীনতা লাভে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নীরবে ও নিভৃতে অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা করেছেন মহিয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তিনি কাণ্ডারির মতো দেশ ও দলের হাল ধরেছেন। এ মহিয়সী নারীর জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন। ফজিলাতুন নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুর প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি স্বপ্নের সাথে স্বপ্ন মিলিয়ে বঙ্গমাতা অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছেন। কৌশলী ও বিচক্ষণতা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সাহস দিয়েছেন। বঙ্গমাতা সকল প্রকার লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে সাদামাটা জীবনযাপন করেছেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্টের শহিদদের আত্মার শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন সতত প্রেরণাদায়ী মহীয়সী নারী : শিল্প প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছেন, ১৯৩০ সালের ৮ই আগস্ট মধুমতিবিধৌত গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, আজ তাঁর ৯২তম জন্মবার্ষিকী। তিনি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য সহধর্মিণী, সতত প্রেরণাদায়ী। রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত না থেকেও তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রেরণার সবচেয়ে বড় উৎস ছিলেন। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে বঙ্গবন্ধুকে তিনি প্রশ্নহীনভাবে সমর্থন দিয়েছেন, মনোবল, সাহস ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে নিজেকে উৎসর্গ করে গেছেন।
আজ রাজধানীর রূপনগর এলাকায় মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ভবনের অডিটোরিয়ামে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এসবকথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ, তাঁর সহজাত মানসিকতা, সাহস ও আত্মবিশ্বাসী সত্ত্বা দ্বারা তিনি প্রভাবিত হয়েছেন। কর্মের মাধ্যমেই তিনি প্রতিষ্ঠা করে গেছেন একটি সংগ্রামমুখর জীবনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দিনের পর দিন বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকাবস্থায় শত সংকট মোকাবিলা করেও তিনি সংসার সামলে ছেলেমেয়েদের লালন-পালন করেছেন, তাদের পড়াশোনা করিয়েছেন। কোনো দিন স্বামীর প্রতি ন্যূনতম অভিযোগ না করে তাকে রাজনৈতিক লক্ষ্যের পানে এগিয়ে যেতে নিরন্তর উৎসাহ জুগিয়ে গেছেন।
কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে, নেতৃত্বের প্রশ্নে আওয়ামী লীগে যখনই কোনো সংকটের কালো ছায়া ঘনীভূত হয়েছে, বঙ্গমাতা সেই কালো ছায়া দূর করার জন্য পর্দার অন্তরালে থেকে দৃঢ়, কৌশলী ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন। অত্যন্ত প্রখর স্মরণশক্তির অধিকারী বঙ্গমাতা আন্দোলন চলাকালীন প্রতিটি ঘটনা জেলখানায় সাক্ষাৎকারের সময় বঙ্গবন্ধুকে জানাতেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশনা এনে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে জানাতেন।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কালরাতে ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডের সময়ও বঙ্গবন্ধুর আজীবন সুখ-দুঃখের সাথী মৃত্যুকালেও তাঁর সঙ্গী হয়েই রইলেন। তাই বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের আদর্শকে বুকে ধারণ করে নারীসমাজকে ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে হবে।
মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের এডহক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক রাশেদা আক্তার। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে সরকারী বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষ জহুরুল আলম ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. জেসমিন আরা সুলতানাসহ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এরপর প্রতিমন্ত্রী কাফরুল এলাকায় মিরপুর-১৪ নম্বর স্টাফ কোয়ার্টার জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজের পর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের হাইকমিশন ও দূতাবাসসমূহে বঙ্গমাতার ৯২তম জন্মবার্ষিকী পালিত
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে শ্রীলংকায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে হাইকমিশনে বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিশেষ আলোচনা সভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী এবং দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তারপর, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা ও তাঁর পরিবারের শাহাদত বরণকারী অন্যান্য সদস্যের আত্মার মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। পরে দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় এবং বঙ্গমাতার জীবন, তাঁর আত্মত্যাগ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর অবদানের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে, হাইকমিশনার তারেক মোঃ আরিফুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বঙ্গমাতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামে তাঁর অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করেন। বঙ্গমাতার বহুমাত্রিক ভূমিকা – একজন সার্থক মা হিসেবে বঙ্গমাতার সংসার সামলানো, সন্তানদের সুশিক্ষিত আদর্শবান মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা, একই সাথে সহধর্মিণী হিসাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সাহস ও অনুপ্রেরণা যোগানো এবং সর্বোপরি বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তাঁর নিবিড় সংশ্লিষ্টতার উপরও তিনি আলোকপাত করেন। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব যে সীমাহীন ধৈর্য্য, অসীম সাহসিকতা ও বিচক্ষণতার সহিত তৎকালীন সামগ্রিক পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করেছেন তা বাঙালি নারীদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলেও হাইকমিশনার অভিমত ব্যক্ত করেন।
শ্রীলংকায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ছাড়াও ব্রুনাই দারুসসালামে বাংলাদেশ হাইকমিশন, দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে, ভিয়েতনামের হ্যানয়ে ও পুর্তগালের লিসবনে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালিত হয়েছে।
বঙ্গমাতার আদর্শ ধারণ করে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে : বাণিজ্যমন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের আদর্শ ধারণ করে দেশের মানুষের কল্যাণে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধু সারাজীবন মানুষের কল্যাণে সংগ্রাম করেছেন, সংসার সামাল দিয়েছেন বঙ্গমাতা। বঙ্গবন্ধু জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলোর ১৩ বছর জেলে কাটিয়েছেন। মাত্র ৮ বছর বয়সে বঙ্গমাতার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বঙ্গবন্ধু। কোনোদিন বিরক্ত হননি বঙ্গবন্ধুর প্রতি, উৎসাহ ও সাহস জুগিয়েছেন। তিনি ছিলেন একজন আদর্শ গৃহিণী।
আজ ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ৫ সন্তানকে নিয়ে বঙ্গমাতা কঠিন সময় অতিবাহিত করেছেন। এর মাঝে সন্তানদের যোগ্য করে মানুষ করেছেন, দলের নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন। বঙ্গমাতা একজন দক্ষ গৃহিণী এবং রাজনীতিবিদের স্ত্রী ছিলেন। ৭ মার্চের ভাষণের আগে তিনি সঠিক পরামর্শই বঙ্গবন্ধুকে দিয়েছিলেন, একইভাবে বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তির বিরোধিতা করে শর্তহীন মুক্তি চেয়েছিলেন। তিনি একজন সাধারণ গৃহিণী হয়েও তাঁর সিদ্ধান্ত ছিল অসাধারণ। বঙ্গমাতা বাঙালি জাতির প্রেরণার উৎস। তিনি একজন অতি সাধারণ গৃহিণী হয়েও তারঁ অসাধারণ সিদ্ধান্ত বাঙালি জাতির জন্য স্বাধীনতা অর্জনের পথকে সুগম করেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মাহফুজা আখতার, বাংলাদেশ কম্পিটিশন কমিশনের চেয়ারপারসন মোঃ মফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোঃ জাফর উদ্দিন, বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ আশরাফুল ইসলাম, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রধান নিয়ন্ত্রক শেখ রফিকুল ইসলাম, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি এন্ড ফার্মসসমূহের প্রধান নিয়ন্ত্রক শেখ সোয়েবুল আলম মজুমদার, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, ট্রেডিং করপোরেশন অভ্ বাংলাদেশ (টিসিবি) এর চেয়ারম্যান ব্রি.জে. মোঃ আরিফুল হাসান।
আলোচনা সভা শেষে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
নারীদের সাইবার দুনিয়ায় সুরক্ষিত রাখতে ডিজিটাল লিটারেসি বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা দিতে হবে : আইসিটি প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, নারীদের সাইবার দুনিয়ায় সুরক্ষিত রাখতে এবং অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সাইবার হাইজিন, অ্যাওয়ারনেস ও ডিজিটাল লিটারেসি বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা দিতে হবে।
প্রতিমন্ত্রীর আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের উদ্যোগে ÔGender Equality and Future Bangladesh: Voices from Young GenerationsÕ শীর্ষক বিশেষ অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ এনামুর রহমান এবং জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক দলনেতা ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুরতজা।
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করে ইতিমধ্যেই অনেক নারীর সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে এখন যে কেউ ন্যাশনাল হেল্প লাইন ৩৩৩ কলসেন্টারে ফোন করে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের জন্য অথবা সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কে কোনো পরামর্শ , সুপারিশ কিংবা আইনের আশ্রয় সহজেই নিতে পারে। তিনি বলেন, কলসেন্টার ৯৯৯ এ ফোন করে ৫ বছরে ৯ কোটি মানুষ সেবা গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যেই আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্ট্যাডিজ চাইলে তাদের সাথে দেশজুড়ে সাইবার সিকিউরিটি ও সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করবে বলে তিনি জানান।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, গ্রামীণ তরুণদের আইসিটিতে সংযুক্ত করতে ২০১০ সালে ইউনিয়ন সার্ভিস সেন্টর স্থাপনের সময় একজন ছেলের সঙ্গে মেয়ে উদ্যোক্তা নিয়োগের যুগান্তকারী উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এবার বেকারসমস্যা সমাধানে ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছানো ও ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দাম ২০০ টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে বিনোদনের পাশাপাশি শিক্ষা-প্রশিক্ষণ নিয়ে অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করে দেশের সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার ঘরে বসেই প্রায় ৫০০ মিলিয়নের বেশি এক্সপোর্ট আর্নিং করছে। করোনাতেও আইসিটি বিভাগের লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্পে ৪০ হাজার তরুণকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৩০ শতাংশ নারী অংশগ্রহণ করেছে। শিপাওয়ার প্রকল্পে ১৩ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরি করা হয়েছে। এবার ২৫০ কোটি টাকার হার প্রকল্পের অধীনে আরো ২৫ হাজার নারী উদ্যোক্তা তৈরি করার লক্ষ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা সেন্টার ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের অধ্যাপক ড.তানিয়া হক।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
বিশ্বসংকটের কারণেই জ্বালানিমূল্য বৃদ্ধি করতে হয়েছে : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
সারা বিশ্বেই সংকট সৃষ্টির কারণে সরকারকে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করতে হয়েছে এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম স্থিতিশীলভাবে কমলে আবারও দেশে মূল্য সমন্বয় করা হবে বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ ।
আজ সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এসময় বঙ্গমাতা শহিদ শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। তিনি বঙ্গবন্ধুর শুধু সহধর্মিণী ছিলেন তা নয়, তিনি বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধা ছিলেন। আমাদের স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধসহ সর্বক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদান এবং বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের পুরো ন’মাস অন্তরীণ থাকার পরও তিনি আপস করেননি। তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।’
মন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীতে জ্বালানি তেলের দাম ৭০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জনগণের কথা চিন্তা করে জ্বালানি তেলের মূল্য গত বছর বৃদ্ধি করেনি এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে জ্বালানি এবং বিদ্যুৎখাতে ৫৩ হাজার কোটি টাকা বা ৬ বিলিয়ন ডলার ভরতুকি দিয়েছে। এমন অব্যাহতভাবে ভরতুকি দেয়া কোনো দেশের পক্ষে সম্ভবপর নয়। গত তিন মাসে বিপিসি সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে অর্থাৎ প্রতিদিন প্রায় ১শ’ কোটি টাকা। সেই প্রেক্ষাপটে কয়েকদিন আগে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পরও আমাদের দেশের মূল্য ভারতের পশ্চিমবাংলার মূল্যের সমান উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য ১১৪ টাকা, ভারতের ডিজেলের মূল্য পশ্চিমবাংলায় ১১৪-১১৫ টাকা। বাংলাদেশে পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা, ভারতের পশ্চিমবাংলায় ১৩০-১৩১ টাকা। ডিজেলের দাম নেপালে ১২৮ দশমিক ৬৩ টাকা, ভুটানে ১৪৪ দশমিক ৩৯ টাকা, শ্রীলংকায় ১১৪ টাকা, ফ্রান্সে ২২৪ টাকা, জার্মানিতে ১৯০ টাকা, অস্ট্রেলিয়ায় ১৬০ টাকা, সাউথ কোরিয়ায় ১৪৪ টাকা, চীনে ১১৮ দশমিক ৬৩ টাকা, ইউএই যে দেশ তেল রপ্তানি করে সেখানে ডিজেলের দাম ১২২ দশমিক ৮ টাকা, ইউকেতে ২৩০ টাকা, সিঙ্গাপুরে ১৮৯ দশমিক ৭৮ টাকা, হংকংয়ে ২৬০ দশমিক ৭৫ টাকা, ফিলিপাইনে ১৩৮ টাকা।
পেট্রোলের তুলনামূলক মূল্যের উপাত্ত তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পেট্রোলের মূল্য ১৩০ টাকা। সেটি ভারতের পশ্চিমবাংলায় ১৩০-১৩১ টাকা। নেপালে ১৩৫ দশমিক ৩৬ টাকা, ভুটানে ১২০ টাকা, শ্রীলংকায় ১৪২ দশমিক ০৩ টাকা, ফ্রান্সে ২৩২ টাকা, জার্মানিতে ১৭৫ টাকা, অস্ট্রেলিয়ায় ১৫০ টাকা, চীনে ১৩১ দশমিক ৯৯ টাকা, ইউএইতে ১১৬ দশমিক ৬৪ টাকা, সিঙ্গাপুরে ১৯০ দশমিক ৪৫ টাকা, হংকংয়ে ১৬৪ দশমিক ৭২ টাকা। এটা হচ্ছে পেট্রোলের মূল্য। সরকার দাম বাড়ানোর পরও জ্বালানিতে ভরতুকি এখনো দিতে হবে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশ জ্বালানি সংকটের কারণে কি ব্যবস্থা নিয়েছে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ জার্মানি জ্বালানি সংকটের কারণে সাশ্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। বিভিন্ন শহরে সড়ক বাতি বন্ধ করে দিয়েছে। শহরে বাথরুমে গরম পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এরই মধ্যে ২০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে, আরো ২০ শতাংশ সাশ্রয়ের উদ্যোগ নেবে। জার্মানিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর একমিনিটের জন্যও কখনো বিদ্যুৎ যায়নি, সেখানে লোডশেডিং হচ্ছে, বিদ্যুতের রেশনিং করা হচ্ছে।
ড. হাছান আরো জানান, পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ, স্থায়ী পরিষদের সদস্য ফ্রান্সে জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য ২৭ জুলাই থেকে পাবলিক প্লেস, শপিংমলে এয়ারকন্ডিশন চালানোর ওপর বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে ৭৫০ ইউরো জরিমানা করার ঘোষণাও দিয়েছে। গ্রিস এ বছরের মধ্যে ১০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে। এই গ্রীষ্মকালেও তাদের দেশে এয়ারকন্ডিশনের তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইটালিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে পাবলিক স্থাপনা, পার্ক, শপিংমলগুলো সন্ধ্যা ৭টার পর বাতি নিভিয়ে দেয়া। হাঙ্গেরিতে বিদ্যুতে জ্বালানি সংকটের তীব্রতায় ১৯ জুলাই থেকে এনার্জি ইমারজেন্সি ঘোষণা করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যেককে এসএমএস দিয়ে বলা হয়েছে জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য।
বিশ্বে এই সংকটের প্রেক্ষাপটে আমাদের সরকারকে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করতে হয়েছে, বিশ্ব বাজারে যখন তেলের মূল্য স্থিতিশীলভাবে কমে আসবে ও এর প্রভাব বাংলাদেশে শুরু হবে তখন জ্বালানি তেলের মূল্য আবার সমন্বয় করা হবে, আশ্বস্ত করেন মন্ত্রী।
চীনের সাথে বন্ধুত্বের ফলে ভারতের সাথে সম্পর্কে প্রভাব পড়বে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশের যে সম্পর্ক সেটি রক্তের অক্ষরে লেখা। ভারতের সরকার এবং জনগণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধে যে সহায়তা করেছে, বাংলাদেশ যতদিন থাকবে ততদিন রক্তের অক্ষরে সেটি লেখা থাকবে। তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক যে উচ্চতায় সেই সম্পর্কের সাথে অন্য কোনো দেশের সম্পর্ক তুলনীয় নয়। চীন আমাদের একটি বন্ধুপ্রতিম দেশ এবং আমাদের একটি বড় উন্নয়ন সহযোগী। বন্ধুপ্রতিম দেশ যে কোনো প্রস্তাব দিতে পারে। কারো সাথে বৈরিতা নয়, সবার সাথে বন্ধুত্ব সেটি আমাদের পররাষ্ট্রনীতি। অন্য কোনো দেশের সাথে সম্পর্কের কারণে রক্তের অক্ষরে লেখা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। বাংলাদেশ এবং ভারতের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য।’
এসময় বিএনপি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বহুদিন থেকেই বিএনপির হাঁকডাক-নাকডাক শুনছি। ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকেই সরকার পতনের কথা শুনছি। বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে তাকানোর জন্য। মানুষকে বিভ্রান্ত করার রাজনীতি পরিহার করার জন্য। তারা মাঝেমধ্যে মানুষকে বিভ্রান্ত করে কিন্তু মানুষ তাদের আসল উদ্দেশ্য জানে, তাই বিএনপির হাঁকডাকে কোনো লাভ হবে না।’
জাতির পিতার ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে ওঠার পেছনে বঙ্গমাতার রয়েছে অসাধারণ ভূমিকা : সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, জাতির পিতার ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে ওঠার পেছনে বঙ্গমাতার রয়েছে অসাধারণ ভূমিকা। ইতিহাসে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব কেবল একজন রাষ্ট্রনায়কের সহধর্মিণী নন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের অন্যতম এক নেপথ্য অনুপ্রেরণাদাত্রী। বাঙালি জাতির সুদীর্ঘ স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি বঙ্গবন্ধুকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় চেতনাকে আরো শাণিত করেছিলেন এই মহীয়সী নারী। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন- ‘রেণু আমার সব দুঃখ-কষ্ট, অভাব-অনটন, কারাবরণ হাসিমুখে মেনে নিতে না পারলে আমি বঙ্গবন্ধু হতে পারতাম না।’
আজ রাজধানীর বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমি আয়োজিত প্রকাশনা ও গ্রন্থালোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারাবাহিক ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না হয়েও বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রেরণার সবচেয়ে বড়ো উৎস ছিলেন বেগম মুজিব। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি এবং ছয় দফা দাবির পক্ষে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য বঙ্গমাতা দিন-রাত পরিশ্রম করতেন। তিনি বলেন, আন্দোলন যখন তীব্র আকার ধারণ করল, তখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান সকল দলের সঙ্গে আলোচনার ডাক দিলেন। বন্দি শেখ মুজিবকে সাময়িক মুক্তি দিয়ে অর্থাৎ প্যারোলে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে আলোচনা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু এই প্যারোলে মুক্তির তীব্র বিরোধিতা করলেন বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। কে এম খালিদ বলেন, বঙ্গমাতার এক কথা- মামলা প্রত্যাহার করে মুক্ত মানুষ হিসেবে শেখ মুজিব আলোচনায় যোগ দিতে পারেন- প্যারোলে নয়। অবশেষে আইয়ুব খান বাধ্য হন মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবকে মুক্তি দিতে। এমন বুদ্ধিদীপ্ত, বিচক্ষণ ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন বঙ্গমাতা।
বাংলা একাডেমির সভাপতি বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আনোয়ারা সৈয়দ হক রচিত ‘ছোটোদের বঙ্গমাতা’ ও ‘আমার রেণু’ শীর্ষক গ্রন্থ দু’টি সম্পর্কে আলোচনা করেন যথাক্রমে সাবেক সচিব কবি আসাদ মান্নান ও বাংলা একাডেমির উপপরিচালক কবি ড. সাইমন জাকারিয়া। সূচনা বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমাস।
অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘বঙ্গজাতিমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব : ৯২তম জন্মবার্ষিকীর শ্রদ্ধা’ শীর্ষক গ্রন্থটির আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী পরে রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাদুঘর আয়োজিত ‘মুজিব থেকে জাতির পিতা : বঙ্গমাতার অবদান’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা ২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন।
দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করে গেছেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব : পরিবেশ ও বনমন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়নের জন্য তাঁর সারাটি জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি বঙ্গমাতাও দেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন, ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণীই ছিলেন না, ছিলেন সহযোদ্ধা ও কর্মপ্রেরণাদাত্রী। এ ত্যাগী নারী পরিবারের সব দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জাতির গঠনে মনোনিবেশ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, রাজনীতির নানা দুঃসময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও বঙ্গবন্ধুকে দিয়েছিলেন গঠনমূলক পরামর্শ।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান, বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমীর হোসাইন চৌধুরী প্রমুখ।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর কারাবাসকালে পরিবার ও দলের হাল ধরেছেন বঙ্গমাতা, জনগণের সাথে রেখেছেন নিবিড় যোগাযোগ। জেলখানা থেকে বঙ্গবন্ধুর সকল নির্দেশনা আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগের কাছে তিনি নিয়ে আসতেন। আবার আন্দোলনের সকল ঘটনা জেল গেটে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জানাতেন। বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় প্যারোলে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বনমন্ত্রী বলেন, আত্মপ্রত্যয়ী, অতুলনীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই বীরযোদ্ধা সকলের কাছে ছিলেন অনুকরণীয়। তিনি ছিলেন জাতির পিতার সকল কাজের সাথী ও সহায়ক। জনগণের প্রতি তাঁর ভালবাসা ছিল আকুণ্ঠ ও অকৃত্রিম। আর তাই তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির বঙ্গমাতা। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের প্রাক্কালে তিনি বঙ্গবন্ধুকে নিজের সংগ্রামী জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে স্বাধীনভাবে বক্তব্য দেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বঙ্গমাতা তাঁর বুদ্ধি, দূরদর্শিতা এবং রাজনীতি সম্পর্কে বাস্তবোচিত মূল্যায়ন এবং সুচিন্তিত সিদ্ধান্তের কারণে হয়ে উঠেছেন স্বাধীনতার ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। মন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বাংলার এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস লিখতে হলে বঙ্গবন্ধুর পাশে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছার নামটি লিখতে হবে। তিনি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকবেন চিরকাল।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পর বন অধিদপ্তরের মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সকল দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাগণ অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।
বাঙালির মুক্তিসংগ্রামে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদান অপরিসীম : শিল্পমন্ত্রী
ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) :
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অপরিসীম অবদান রয়েছে। বেগম ফজিলাতুন নেছা ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনে নেপথ্যের কারিগর। তিনি ছিলেন বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন দেশের স্বাধীনতাসহ বঙ্গবন্ধুর সব লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যের প্রেরণা দানকারী। তিনি বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তাঁর প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এঁর ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে আজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। এতে অন্যদের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন বারবার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি জীবনযাপন করছিলেন, তখন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কাছে ছুটে আসতেন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা জানতে। তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিকনির্দেশনা পৌঁছে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা জোগাতেন। বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যখন বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তি নিয়ে কিছু কুচক্রী স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য সহধর্মিণী। রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত না থেকেও তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রেরণার সবচেয়ে বড় উৎস ছিলেন। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে নিজেকে উৎসর্গ করে গেছেন।